Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মন্দিরা-তন্দ্রাদের কাছেই প্রথম ভাইফোঁটা সামসুল-আমিনের

বন্ধুদের মুখে এতদিন ভাইফোঁটার কথা অনেক শুনেছেন। কিন্তু বোন থাকলেও নিজেদের কপালে ওই ফোঁটা জোটেনি নানুরের সাওতার সামসুল হুদা, পোশলার আল আমিন সেখদের।

নানুরে সম্প্রীতি। নিজস্ব চিত্র।

নানুরে সম্প্রীতি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নানুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৯
Share: Save:

বন্ধুদের মুখে এতদিন ভাইফোঁটার কথা অনেক শুনেছেন। কিন্তু বোন থাকলেও নিজেদের কপালে ওই ফোঁটা জোটেনি নানুরের সাওতার সামসুল হুদা, পোশলার আল আমিন সেখদের। কারণ পরিবারে ভাইফোঁটার চল নেই। এই প্রথম ভাইফোঁটা নিলেন তাঁরা। সৌজন্যে নানুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। এ দিন দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের নিয়ে কার্যত গণ ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিলেন তারা। প্রায় দুই শতাধিক কর্মী-সমর্থক ফোঁটা নেন। যাদের মধ্যে একটা বড় অংশই ছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। যারা এই প্রথম ভাইফোঁটা নিলেন।

ভাই ফোঁটা উপলক্ষ্যে এ দিন তাই দলের ব্লক কার্যালয়ে ছিল সাজো সাজো রব। ভাইদের শুধু চন্দনের ফোঁটা পড়িয়ে দিলেই তো হবে না, প্রথা অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে হবে ভুড়ি ভোজেরও। তাই দলীয় কার্যালয়ে হাঁকডাক করে ময়দা মেখে লুচিভাজা থেকে শুরু করে পায়েস তৈরির তদারকি করতে দেখা গেল দলের স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা যুব সভাপতি গদাধর হাজরা, ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যদের। সকাল থেকেই একে একে ধোপ দুরস্ত পোশাক পড়ে হাজির হলেন ভাইরা। তাঁদের ফোঁটা দিতে রেকাবিতে চন্দন বাঁটা, ধান, দুর্বা নিয়ে হাজির পাঁচ বোনও।

নানুর পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভাপতি মধুসূদন পাল, খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অশোক ঘোষের পাশাপাশি বালিগুণীর সেখ টিটু, নানুরের রিঙ্কু চৌধুরীদের পালাক্রমে পাঁচ বছরের প্রস্নিগ্ধা চট্টোপাধ্যায়, দশম শ্রেণির ছাত্রী মন্দিরা মণ্ডল, তন্দ্রা ঘোষরা দিল ফোঁটা। দ্বাদশ শ্রেণির চিত্রালি ঘোষ, সংযুক্তা মণ্ডলরা হাতে হাতে এগিয়ে দিল খাবারের প্লেট। প্রথা মেনে ভাইয়েরাও উপহার হিসাবে বোনেদের হাতে তুলে দিলেন কেউ ৫০, কেউ বা ১০০ টাকার নোট। কপালে চন্দনের ফোঁটা নিয়ে খুশি খুশি মুখে সামসুল হুদা, আল আমিন সেখরা জানান, এতদিন আমরা বন্ধুদের মুখে ভাইফোঁটার কথা শুনেছি। এই প্রথম ফোঁটা নিলাম। ভাবছি এ বার থেকে আমাদের পরিবারেও চালু করব।’’

কী বলছেন বোনেরা?

মন্দিরা বলে, ‘‘এতদিন নিজের ভাইদের বা পাড়ায় ভাইদের ফোঁটা দিয়েছি। একসঙ্গে ২০০ জন দাদা-ভাইকে ফোঁটা দিতে হবে জেনে রাতে ভালো করে ঘুমাইনি। সকাল সকাল বাড়িতে ফোঁটা দেওয়ার পরেই এখানে চলে এসেছি। দাদা’দের দেওয়া টাকায় সবাই একটা করে উপহার কিনে নেব। তাহলে আজকের এই ভাইফোঁটার স্মৃতি থেকে যাবে উপহার।’’

সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব বোধ গড়ে তুলতে প্রতি বছরই গণভাইফোঁটার আয়োজন করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

communal harmony bhaiphonta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE