Advertisement
E-Paper

গণপিটুনি-কাণ্ডে ৬ জনের নামে নালিশ

ঘটনার পর চার দিন কেটে গেলেও পুলিশ একজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আহত সৌম্যপ্রসাদ দে-র পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:০২

গণপিটুনির ঘটনায় ছ’জনের নাম ধরে অভিযোগ করলেন জখম বিএড পড়ুয়ার বাবা। কিন্তু ঘটনার পর চার দিন কেটে গেলেও পুলিশ একজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আহত সৌম্যপ্রসাদ দে-র পরিবার। শুক্রবার তাঁর মা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা সুধা দে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘শহরের মধ্যে ভর সন্ধ্যায় বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে একটা ছেলেকে গণপিটুনি দিল, শয়ে শয়ে লোক দাঁড়িয়ে দেখল, আর পুলিশ এক জনকেও শনাক্ত করতে পারল না?’’ তিনি জানান, সৌম্যর বাবার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। মানসিক চাপে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি সৌম্যর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তাঁকে ছাড়ার পরিস্থিতি হয়নি।

সোমবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুরের হাঁড়িপাড়ায় ছেলেধরা সন্দেহে দলমাদল রোডের বাসিন্দা সৌম্যকে বেদম মারধর করে স্থানীয়েরা। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সৌম্যকে উদ্ধার করলেও কেন তখনই কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছিল, মারধরের স্টিল ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে ধরপাকড় করা হবে। তাতে নিরীহরা হেনস্থার হাত থেকে রেহাই পাবেন। কিন্তু এতদিন পরেও পুলিশ একজনকেও ধরতে পারেনি। দু’জনকে আটক করে দু’দিন ধরে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, দোষীদের ধরার দাবিতে এ বার তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।

এ দিকে যে এলাকায় মারধর ঘটেছে, সেই হাঁড়িপাড়াও গত ক’দিন ধরে পুরুষ শূন্য হয়ে রয়েছে। কাজ কারবার বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মহিলারা। সেই সঙ্গে আতঙ্কও রয়েছে। এ দিন সকালে খাঁ খাঁ পাড়ায় প্রবীণ ঝর্না সাঁতরা, মিঠু সাঁতরা, নারায়ণী সাঁতরা বলেন, ‘‘সামনেই আমাদের পাড়ার অম্বুবাচীর পুজো রয়েছে। এ দিকে, পাড়ার এই অবস্থা। পুলিশ এলে বলব, নির্দোষ লোকেদের ঘরে ফিরতে সাহায্য করুক।’’ দুপুরে হাঁড়িপাড়ায় যান এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) লাল্টু হালদার। তিনি এলাকার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি ওঁদের বলেছি, তাঁরা নিশ্চিন্তে পুজো করতে পারেন। তবে প্রকৃত দোষীদের রেহাই মিলবে না। এলাকায় এলেও ধরা হবে, পালিয়ে থাকলেও ছাড় পাবে না।’’

ঘটনার দিনেই পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়েছিল। তবে তখন কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। পরে অবশ্য সৌম্যর বাবা খোঁজ নিয়ে ছ’জনের নাম ধরে এবং আরও কয়েকশো মানুষ মারধরে যুক্ত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু পুলিশ ধরছে না কেন?

এসডিপিও-র দাবি, ‘‘প্রথম দিন থেকেই একটা কথা বলেছি, নিরীহ লোককে আমরা হেনস্থা করব না। একটু ধৈর্য ধরুন, প্রকৃত দোষীরা ঠিক গ্রেফতার হবে এবং আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’’

Complaint lynching বিষ্ণুপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy