Advertisement
E-Paper

জামিন পেয়ে সুদীপ পুরসভায়

তিন দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরে অবশেষে জামিন পেলেন পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয়।এ দিনও বিধায়কের জামিনের আর্জি জানান আইনজীবী অরূপ ভট্টাচার্য ও অমিতাভ মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১১
কড়া নিরাপত্তায়। মঙ্গলবার আদালতের পথে বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র।

কড়া নিরাপত্তায়। মঙ্গলবার আদালতের পথে বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র।

তিন দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরে অবশেষে জামিন পেলেন পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয়।

এ দিনও বিধায়কের জামিনের আর্জি জানান আইনজীবী অরূপ ভট্টাচার্য ও অমিতাভ মণ্ডল। সরকারি আইনজীবী অরুণ মজুমদার সেই আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে দাবি করেন, অভিযুক্ত একজন প্রভাবশালী। তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। এমনকী সিজার্স লিস্টে স্বাক্ষরও করেননি। সওয়াল জবাব শুনে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট কুমকুম চট্টোপাধ্যায় বিধায়কের জামিন মঞ্জুর করেন। সরকারি আইনজীবী জানান, দু’হাজার টাকার বন্ড ও মামলার প্রয়োজনে তদন্তকারী আধিকারিক ডেকে পাঠালে যাবতীয় সহযোগিতার শর্তে জামিন মঞ্জুর হয়েছে। পরে বিধায়কের আইনজীবী অরূপবাবু বলেন, ‘‘অভিযুক্ত তদন্তে সহযোগিতা করেছেন।’’

শনিবার পুরসভা থেকে চেকবই ও জরুরি নথি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে সুদীপবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়। দুই দফায় মোট তিন দিন পুলিশি হেফাজতে থাকেন সুদীপবাবু। জামিন পাওয়ার পরে এ দিন বিধায়ক তথা পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায় পুরসভায় যান। তিনি বলেন, ‘‘আমি পুরসভার চেক বই ও নথি তো বাইরে নিয়ে যাইনি। পুরসভায় বিরোধীদের বসার যে ঘর রয়েছে, সেখানে রেখেছিলাম।’’ দু’দিন পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলেও পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা পাননি বলে তিনি অভিযোগ করেন। বিধায়ক বলেন, ‘‘অসুস্থতার জন্য হাঁটু মুড়ে বসতে পারি না। লকআপে শুধু শতরঞ্জি ছিল। আমাকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েই কাটাতে হয়েছে।’’

সুদীপবাবু এ দিন আক্রমণ করেন পুরপ্রধানকেও। তিনি বলেন, ‘‘মানুষজন প্রয়োজনে পুরপ্রধানকে পান না। উনি পুরসভা চালান, নয়তো পদত্যাগ করুন। আমাকে বলা হয়েছিল শাসকদলে নাম লেখাতে। না গিয়ে দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছি। তাই প্রতিহিংসাবশত ফাঁসানো হয়েছে।’’

গত রবিবার আদালতের বাইরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে শাসকদল ও পুলিশকে নিশানা করায় এ দিন বিধায়ককে কার্যত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আদালতে পেশ করে পুলিশ। পুরুলিয়া সদর থানা থেকে পাঁচটি গাড়ির কনভয়ে তাঁকে নিয়ে আসা হয়। কনভয়ে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাস। কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে এজলাসের সামনের চত্বরের দখল নিয়ে নিয়েছিল পুলিশ। দড়ি দিয়ে এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছিল। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি, ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার একাধিক অফিসারের সঙ্গে একাধিক থানার ওসিদের মোতায়েন করা হয়েছিল। সঙ্গে রাখা হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও। বিধায়ককে এজলাসে নিয়ে যাওয়ার পরে কাঠগড়ার সামনেও পুলিশ ঘিরে থাকে। জামিন পাওয়ার পরেও তাঁকে গাড়িতে তোলা পর্যন্ত ঘিরে ছিল পুলিশ। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাঁক কাছ পর্যন্ত ঘেঁষতে পারেননি।

রবিবার আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিধায়ক সংবাদমাধ্যমের কাছে শাসকদল ও পুলিশের সমালোচনা করায় অস্বস্তিতে পড়েছিলেন পুলিশকর্তারা। ওই ঘটনার পরের দিন, সোমবার পুরুলিয়া সদর থানার ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে পাঠানো হয় মানবাজারে। মানবাজারের ওসি দীপঙ্কর সরকারকে পুরুলিয়া সদর থানার ওসি করে আনা হয়। গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রঘুনাথপুর থানা থেকে দীপঙ্কর বাবুকে মানবাজারে বদলি করা হয়েছিল। তবে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘এটি নিছক রুটিন বদলি। তার বেশি কিছু নয়।’’

Congress MLA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy