E-Paper

ক্ষতিপূরণ পেতেই কি তড়িঘড়ি নির্মাণ

সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে মমতা জানান, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের খয়রাশোলের ভীমগড় থেকে নলহাটি ২ ব্লকে নাগপুর চেকপোস্ট পর্যন্ত রাস্তা দুই লেন থেকে চার লেন করার জন্য আবেদন পেয়েছিলেন তিনি।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১৯
এভাবেই একের পর এক নির্মাণ হয়ে চলেছে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষে। দুবরাজপুর এলাকায় তোলা।

এভাবেই একের পর এক নির্মাণ হয়ে চলেছে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষে। দুবরাজপুর এলাকায় তোলা।

একের পর এক নির্মাণ শুরু হয়েছে রাস্তা ঘেঁষে। কোনওটি দ্বিতল কোনওটি ত্রিতল। রাতারাতি বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। দুবরাজপুর শহর ছাড়িয়ে ১৪ জাতীয় সড়ক খয়রাশোলের ভীমগড় পর্যন্ত গেলেই তা চোখে পড়বে।

জাতীয় সড়ক চার লেনে সম্প্রসারিত হবে, এই খবর কানে যেতেই রাস্তা ঘেঁষে নির্মাণের তৎপরতা শুরু হয়েছে। লক্ষ্য কি মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ আদায়, উঠছে প্রশ্ন। কারণ এমনটাই হয়েছিল দুবরাজপুর শহর এড়িয়ে বাইপাস তৈরির পরিকল্পনা সামনে আসতে। ক্ষতিপূরণের অঙ্কও এর জেরে বেশি হয়েছে বলে খবর। এ বার রাস্তা সম্প্রসারিত হবে শুনে নির্মাণের হিড়িকের পাশাপাশি রাস্তা ঘেঁষে কৃষিজমির দামও ক্রমে বাড়ছে বলেও খবর।

জেলার মাঝ বরাবর চলে যাওয়া ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক শুধু জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাই নয়, ভারতের একটি অংশ ও দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের, বিশেষত উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। শয়ে শয়ে পাথর ও বালি বোঝাই লরি-ডাম্পার তো আছেই, ওই রাস্তায় চলে অন্য পণ্যবাহী যানবাহনও। মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের চাপে বেহাল হয়ে পড়ছে জাতীয় সড়ক। দুর্বল হয়ে গিয়েছে সেতুগুলি। তাই ওই সড়ক দুই থেকে চার লেনে সম্প্রসারিত করার ভাবনা নেওয়া হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে প্রশাসনিক সভা থেকে সেই খবরটি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে মমতা জানান, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের খয়রাশোলের ভীমগড় থেকে নলহাটি ২ ব্লকে নাগপুর চেকপোস্ট পর্যন্ত রাস্তা দুই লেন থেকে চার লেন করার জন্য আবেদন পেয়েছিলেন তিনি। তার পরেই এলাকার মানুষের কথা ভেবে নীতিগত ভাবে সম্মতির সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান তিনি। ঘটনা হল, তার পর থেকেই রাস্তার পাশে নির্মাণে গতি এসেছে। তবে ১০০ কিমির বেশি রাস্তার দু’দিকে সব অংশে নয়, এই তৎপরতা কেবল দুবরাজপুর শহর পেরিয়ে খয়রাশোলের ভীমগড় পর্যন্ত। সেখানেই রেলপথ এড়িয়ে উড়ালপথ তৈরি হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, কয়েক মাস আগেও যেখানে রাস্তা ঘেঁষে ধানখেত ছিল, সেখানেই এখন দ্বিতল, ত্রিতল বাড়ি বা ব্যবসা করার ঘর তৈরি হয়েছে।

জনপদ থেকে অনেকটা দূরে এই নির্মাণগুলির অধিকাংশই নিম্ন মানের বলেও অভিযোগ। ফলে ক্ষতিপূরণ পেতেই তা করা হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন নিয়ে চর্চা চলছে। জাতীয় সড়কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা বলছেন, ‘‘যতক্ষণ না বিজ্ঞপ্তি জারি হচ্ছে, কেউ যদি নিজের জমিতে বাড়ি তৈরি করেন তাতে বলার কিছু নেই।’’ সহমত পোষণ করেছেন জাতীয় সড়কের ডিভিশন ১২-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত গড়াইও।

যদিও বিজ্ঞপ্তি জারি হতে এখনও দেরি আছে বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর। কারণ যে নকশা অনুযায়ী সম্প্রসারণ করার কথা, সেই নকশায় আপত্তি উঠছে জনশুনানিতে। সমস্যা এড়াতে নতুন নকশা তৈরি করে মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। সেই নকশা চূড়ান্ত হলে ডিপিআর বানানোর কাজ শুরু হবে। কারিগরি অনুমোদন, অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পরই বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। কিন্তু সুযোগসন্ধানীরা তার আগেই নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে খবর মিলছে এলাকা থেকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dubrajpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy