সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ছবি। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের অনুষ্ঠান মঞ্চে রাজ্যের এক মন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে যাওয়ার চেষ্টা উর্দিধারীর। রবিবার দিনভর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল সেই ছবি।
এ দিন সকালে বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে রামপুরহাট থানা চত্বরে শহরের প্রবীণ নাগরিকদের সম্মান জানাতে ‘সম্মানীয়’ প্রকল্প চালু হয়। ওই অনুষ্ঠানে রামপুরহাট পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ৫ জন করে ষাটোর্দ্ধ নাগরিককে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের নাম এই প্রকল্পে নথিভুক্ত করা হয়। আস্তে আস্তে সব বয়স্ক নাগরিকদের নামই এতে নথিভুক্ত হবে। মাসে দু’বার তাঁদের খোঁজ খবরও করা হবে পুলিশের পক্ষ থেকে। ১৮টি ওয়ার্ডের জন্য পুলিশ কর্মীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়। ওই দল তিনটির মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন রামপুরহাট থানার এএসআই রঞ্জন দত্ত। এ দিন মঞ্চে রঞ্জন দত্তর দলের নাম ডাকার পরেই তিনি মঞ্চে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে এসে দাঁড়ান। আশিসবাবু ওই পুলিশ আধিকারিকের হাতে প্রকল্পের কাগজ তুলে দেন। দেখা যায়, সেই কাগজ হাতে নেওয়ার পরেই ওই উর্দিধারী মন্ত্রীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে যান।
মঞ্চে তখন কৃষিমন্ত্রী, রামপুরহাটের উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকার-সহ রামপুরহাটের এসডিপিও সৌম্যজিত বড়ুয়া, রামপুরহাট থানার আই সি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় ও পুলিশের অন্য আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। পায়ের কাছে ঝুঁকতে দেখে মন্ত্রী তড়িঘড়ি ওই এএসআইকে হাত বাড়িয়ে ধরে ফেলেন। কিন্তু ততক্ষণে উপস্থিত জনতার হাতে থাকা মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে সেই দৃশ্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে গত বছর আইজি পশ্চিমাঞ্চল রাজীব মিশ্রের উর্দি পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা থেকে ২০১৪ সালে তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জঙ্গল মহলের মা’ বলা বা ২০১২-র কালীপুজোয় তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পুলিশের পোশাক পরে খালি পায়ে ঘুরতে দেখার ছবির সঙ্গে এ দিনের ঘটনাকে জুড়ে দেওয়া নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের কিছু কিছু পুলিশ তৃণমূলের কিছু নির্দিষ্ট নেতার দলদাসে পরিণত হয়েছে এই ঘটনা তার প্রমাণ।’’
যদিও ওই এএসআইয়ের দাবি, ‘‘মন্ত্রী আমার শিক্ষক ছিলেন। প্রকাশ্য মঞ্চে শিক্ষাগুরুকে কাছে পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে প্রণাম করে ফেলেছি। আর যেহেতু অনুষ্ঠানের সঙ্গে বয়স্ক নাগরিকদের সম্মান জড়িয়ে আছে সেক্ষেত্রে আমি উর্দি পরে আছি কী না সেটা খেয়াল ছিল না সেই মুহূর্তে।’’ আর মন্ত্রী বলেন, ‘কী আর বলব! আমি তো পা বাড়িয়ে দেইনি। একজন ছাত্র হিসেবে ওই এএসআই আমাকে প্রণাম করতে এসেছিলেন। এতে অপরাধের কি আছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy