একই দলের দখলে দুই পঞ্চায়েত। কিন্তু দু’ক্ষেত্রে দুই ভিন্ন ছবি চোখে পড়ল। সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরানোর গোঁ ধরেছিল বিজেপি। কিন্তু, মহম্মদবাজারের আঙ্গারগড়িয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবির পাশেই রাখা হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভারত মাতার ছবি। যদিও ভারত মাতার ছবি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে তৃণমূল।
গত শুক্রবার কড়িধ্যায় পঞ্চায়েত কার্যালয়ে প্রধান ও উপপ্রধানের বসার আসনের উপরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকা নিয়ে পঞ্চায়েতের জয়ী বিজেপি ও তৃণমূল সদস্যদের মধ্যে বচসা বাধে। একাধিক বার পরিস্থিতি হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছলেও কোনও রকমে তা সামাল দেওয়া হয়। মমতার ছবি না-সরালে নিজেদের আসনে বসবেন না বলে জানিয়ে দেন বিজেপির প্রধান ও উপপ্রধান। সে দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে সিউড়ি থানায় অভিযোগও করেছেন বিজেপি সদস্যেরা। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, পরে পঞ্চায়েতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ঘুরিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। এরই প্রতিবাদে সোমবার কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিলও করেছিল তৃণমূল।
কিন্তু, বুধবার ভিন্ন ছবি দেখা গেল আঙ্গারগড়িয়ায়। এই পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে ৬টিতে জয়ী হয় বিজেপি, ৫টিতে জয়ী হয় তৃণমূল ও একটিতে সিপিএম। বোর্ড গঠনের দিন এখানে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। কিন্তু, এ দিন বিজেপির নবনির্বাচিত প্রধান সুকুমার হাঁসদা ও উপপ্রধান সুবল বাগদি দায়িত্ব নেওযার সময় কোনও অশান্তি হয়নি। ছিলেন বিজেপির অন্য জয়ী সদস্য এবং স্থানীয় বিজেপি নেতা কর্মীরা। দুপুরের দিকে এলাকার দলীয় কার্যালয় থেকে ভারত মাতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে মিছিল করে পঞ্চায়েতের সামনে আসেন বিজেপি কর্মীরা। পঞ্চায়েতে ঢুকে প্রধানের ঘরে তাঁর বসার আসনের উপরে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর ছবির পাশেই ভারত মাতার ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগানো হয়। মমতার ছবি সরানোর কোনও জেদ এ দিন বিজেপি করেনি।
বিজেপির জেলা ওবিসি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ ভাণ্ডারি বলেন, ‘‘আমরা অশান্তির মধ্যে না গিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রধানের কক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর ছবির পাশে প্রধানমন্ত্রী ও ভারত মাতার ছবি লাগিয়েছি। আশা করি, এতে কারও কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’ আঙ্গারগড়িয়া অঞ্চল তৃণমূলের সহ-সভাপতি সমীরণ গড়াই বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পাশে প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু, মাঝে যে ভারত মাতার ছবি লাগানো হয়েছে, সেখানেই আমাদের আপত্তি রয়েছে। ভারত মাতা আরএসএসের প্রতীক। আমরা এই বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের কাছে জানাব।’’
এ দিন প্রধান ও উপপ্রধান-সহ জয়ী সদস্যদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে উপস্থিত সকলকে বিজেপির পক্ষ থেকে লাড্ডু খাওয়ানো হয়। সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘আমি চেষ্টা করব আগামী পাঁচ বছর এলাকার সকল স্তরের মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)