Advertisement
E-Paper

রোগী ও পরিবারের ‘সেতুবন্ধনে’ ওঁরা দু’জন

হাসপাতালে ফোনে কিংবা ভিডিয়ো কলিং-এ রোগীর সঙ্গে তাঁর পরিজনের কথা বলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৬:৪০
সৌমেন।

সৌমেন। নিজস্ব চিত্র।

কেমন আছে শারীরিক অবস্থা—হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোভিড রোগীর আত্মীয়দের সবচেয়ে বড় উৎকন্ঠা থাকে এটা নিয়েই। দিন কয়েক আগে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ফোনে কিংবা ভিডিয়ো কলিং-এ রোগীর সঙ্গে তাঁর পরিজনের কথা বলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সেই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন হাসপাতালের দুই মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (অপট্রোমেট্রি) সৌমেন দাঁ এবং অসীম চক্রবর্তী। স্বেচ্ছায়। যা প্রশংসা কুড়িয়েছে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের।

দশ বছর ধরে জেলা হাসপাতালে রয়েছেন সৌমেনবাবু। অন্য দিকে, বছর দেড়েক হল কাজে যোগ দিয়েছেন অসীমবাবু। তাঁরা দু’জনেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন গত বছর। তাঁদের এমনিতে কোভিড ওয়ার্ডে ডিউটি পড়ার কথা নয়। ডিউটি করছেনও না তাঁরা। কিন্তু কোভিড ওয়ার্ডে গিয়ে পিপিই কিট পরে প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে তাঁদের বাড়ির লোকের যোগাযোগ সেতু হয়ে উঠেছেন ওই দু’জন। যা স্বস্তি দিয়েছে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর পরিবার-পরিজনকে। তাঁদের অনেকেই বলছেন, ‘‘কোভিড ওয়ার্ডে তো ঢুকতে দেয় না। দিন অন্তত একবার কথা বলার সুযোগ দাদারা করে দিয়েছেন।’’

সৌমেনবাবুর কথায়, ‘‘যখন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলাম, তখন আমাদের নিয়ে আত্মীয়দের উদ্বেগ দেখেছি। মনে হল, আমরা কেন এই কাজটা করব না?’’ অসীমবাবু বলেন, ‘‘রোগীর সঙ্গে বাড়ির লোকের কথা বলিয়ে দেওয়ার কথা স্বাস্থ্যকর্তারা ভেবেছেন। কাউকে তো দায়িত্ব নিতেই হত। আমরা নিয়েছি।’’

অসীম।

অসীম।

বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি জানান, সৌমেন ও অসীমবাবু এই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নেওয়ায় দু’টি সুবিধা হয়েছে। প্রথমত, কোভিড আক্রান্তেরা তাঁদের দেখে সাহস পাচ্ছেন এই ভেবে যে, এঁরা তো করোনাকে হারিয়ে দিব্যি কাজ করছেন। দ্বিতীয়ত, রোগীর পরিজন প্রতিদিন প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলতে বা একবার চোখের দেখা দেখতে পাচ্ছেন। হোক না সেটা ভিডিয়ো কলে। সিউড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার শোভন দে বলছেন, ‘‘কেউ ওঁদের জোর করেনি। মানবিকতার খাতিরে ওঁরা নিজেরাই এই দায়িত্ব নিয়েছেন।’’

মোট ২০০ কোভিড শয্যার সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বর্তমানে ১০৭ জন করোনা রোগী আছেন। অক্সিজেন সাপোর্টে অনেককে রাখতে হলেও ভেন্টিলেটর সাপোর্টে এই মুহূর্তে কোনও রোগী নেই। প্রতি দিন বিকাল তিনটে থেকে সাতটা পর্যন্ত পালা করে এক দিন সৌমেনবাবু, অন্য দিন আসীমবাবু ফোন নিয়ে প্রতি রোগীর কাছে যাচ্ছেন এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিচ্ছেন।

তবে, দু’জনেই জানালেন, পিপিই কিট পরে থাকা কষ্টকর। কিন্তু, রোগী ভাল আছেন, এটা শোনার পরে আত্মীয়দের স্বস্তি ও শান্তি দেখে তাঁদের সেই কষ্ট লাঘব হয়ে যায়।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy