Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

সতর্ক না হলে বাড়বে সংক্রমণ

আরও সমস্যা হল, স্বেচ্ছায় করোনা পরীক্ষা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা ভীষণ ভাবে বেড়েছে। ফলে চিহ্নিত হননি এমন উপসর্গহীন সংক্রমিতরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

ঝুঁকি: পুজোর বাজার করতে ভিড় রাস্তায়। করোনা সংক্রমণের ভয় থাকলেও মাস্ক নেই অনেকের মুখে। মঙ্গলবার রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

ঝুঁকি: পুজোর বাজার করতে ভিড় রাস্তায়। করোনা সংক্রমণের ভয় থাকলেও মাস্ক নেই অনেকের মুখে। মঙ্গলবার রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪৭
Share: Save:

প্রশাসনের তরফে দুর্গাপুজো ঘিরে জারি করা হয়েছে একাধিক নির্দেশিকা। তবে অনেকেরই প্রশ্ন, উৎসব পালনে কি এত বিধিনিষেধ মানা সম্ভব হবে? তা যদি না হয় তাহলে তাহলে যে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে সেই আশঙ্কা করছেন রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ।

এ ব্যাপারে একমত জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও। তাঁরা বলছেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে গণেশপুজো, কেরলে ওনাম উৎসবের পরে সংক্রমণের পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক হয়ে উঠেছে। একই উৎসাহে দুর্গাপুজো পালিত হলে ছবিটা একই রকম ভয়াবহ হতে পারে।’’

সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্তদের জন্য শয্যা বাড়ানোর কথা ভেবেছেন বীরভূমের দুই স্বাস্থ্য জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। দুটি কোভিড হাসপাতালের ১৪০টি শয্যা ছড়াও দু’টি সেফ হোমে সঙ্কটজনক করোনা রোগীর চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলার ভাবনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলায় দু’হাজারের বেশি পুজো মণ্ডপে ভিড় হলে এবং সকলে পারস্পরিক দুরত্ববিধি মেনে না চললে, মাস্ক না পরলে সেই শয্যা ভর্তি হতে বেশি সময় লাগবে না বলেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ।

জানা গিয়েছে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় একটি ৫০ শয্যার কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। তার মধ্যে সঙ্কটজনক রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ ও সিসিইউ মিলিয়ে ১০টি শয্যা রয়েছে। ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ৮টি। অন্যদিকে বোলপুরে কোভিড হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৯০টি। সঙ্কটজনক রোগীদের চিকিৎসার জন্য রয়েছে ৮টি শয্যা। ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ৯টি। তার মধ্যে ৪টি লাগানো আছে। বাকিগুলি দু-একদিনের মধ্যেই লাগানো হবে। তবে স্বাস্থ্যকর্তারা অনেকেই জানাচ্ছেন, সংক্রমণ বাড়লে ওই সংখ্যক শয্যা কম পড়ে যেতে পারে। সংক্রমণের ঢেউ এলে তখন তা সামলানো যাবে না।

এমন ভাবনার পিছনে অবশ্য সঙ্গত যুক্তি রয়েছে। সুস্থতার হার স্বস্তি দিলেও করোনা সংক্রমণের ছবিটা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে জেলায়। ইতিমধ্যেই জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। কিন্তু মানুষজনের মধ্যে দূরত্ব বিধি বজায় না রাখা, মাস্ক না পরার প্রবণতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

আরও সমস্যা হল, স্বেচ্ছায় করোনা পরীক্ষা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা ভীষণ ভাবে বেড়েছে। ফলে চিহ্নিত হননি এমন উপসর্গহীন সংক্রমিতরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বাজার হাটে থিকথিকে ভিড়। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুজোর কেনাকেটা চলছে। যতই প্রশাসনের তরফে বিধিনিষেধ থাক, এত সংখ্যক লোক পুজোয় বেরোলে সেই ভিড়কে বিধিনিষেধে আটকে রাখা সম্ভব কি না তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলছেন, ‘‘পুজোয় সঠিক নির্দেশিকা মেনে চলা না হলে সংক্রমণ বাড়বে এই আশঙ্কা আছেই। তারাপীঠের কাছে একটি সেফ হোমকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’

একই বক্তব্য বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়িরও। তিনি জানান, পুজোর পরে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা মাথায় রেথে দুবরাজপুরের নিরাময় হাসপাতালের সেফ হোমটিকে সঙ্কটজনক করোনা রোগীর চিকিৎসা পরিকাঠামোর গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে মঙ্গলবারই স্বাস্থ্য দফতরে একটি চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Mask COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE