Advertisement
E-Paper

টিকা নিতে তুমুল ভিড়, এল পুলিশ

রাস্তায় পুলিশি টহল থাকলেও ভ্যাকসিন নিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন জেনে প্রমাণ দেখে লোকজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৬:২৬
বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লাইন ঠিক করতে নামল পুলিশ। ভিড় রঘুনাথপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও।

বান্দোয়ান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লাইন ঠিক করতে নামল পুলিশ। ভিড় রঘুনাথপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও। নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘ বিরতির পরে, মঙ্গলবার থেকে ফের করোনা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় দেওয়া শুরু হল পুরুলিয়া জেলায়। জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এ দিন প্রতিষেধক নিতে ভোর থেকে লাইন পড়ে। বেলা যত বেড়েছে, বেড়েছে ভিড়। অনেক জায়গাতেই দূরত্ব-বিধি মানা হয়নি। এমনকি, কোথাও কোথাও ভিড় সামলাতে পুলিশকেও হস্তক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দু’-একটি জায়গায় ভিড় সামলাতে কিছুটা সমস্যা হলেও মোটের উপরে টিকাকরণ নির্বিঘ্নে হয়েছে।

প্রশাসনিক কড়াকড়িতে যানবাহন না থাকলেও টিকার প্রথম ডোজ় পেতে এ দিন কোথাও ভোর, কোথাও সাত-সকালেই প্রতিষেধক নিতে ভিড় জমান মানুষজন। পুরুলিয়া শহরের চকবাজারের কেন্দ্র, রঘুনাথপুর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কাশীপুর কল্লোলি গ্রামীণ হাসপাতাল, মুরাডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ কয়েকটি জায়গায় লম্বা লাইন পড়ে। বেলা একটু বাড়তেই দীর্ঘ লাইন পড়ে যায় বান্দোয়ান ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও. রঘুনাথপুর, কাশীপুর ও বান্দোয়ানে পুলিশকে গিয়ে ভিড় সামলাতে হয়। কোথাও কোথাও রাস্তায় পুলিশি টহল থাকলেও ভ্যাকসিন নিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন জেনে প্রমাণ দেখে লোকজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

কাশীপুরের কল্লোলি গ্রামীণ হাসপাতালে সাত-সকালেই লাইন দিয়েছিলেন ইন্দ্রবিল গ্রামের বাসিন্দা ভক্তি মাহাতো, আদ্রা শহরের লক্ষ্মী ভট্টাচার্য, কাশীপুরের প্রশান্ত দে-সহ অনেকেই। ভক্তিদেবী বলেন, ‘‘গত কালই জেনেছি, মঙ্গলবার থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। গাড়ি ভাড়া করে এসেছি।’’ প্রশান্ত দে জানান, খুব সকালে লাইন দিতে পারেননি বলে প্রতিষেধক পাননি। পরের দিন টিকা পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে।

এর পাশাপাশি ছিল ভিড়ে দূরত্ব-বিধি না মানার ছবি। রঘুনাথপুর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেলা বাড়তেই ঝামেলা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, কিছু লোক লাইন ভেঙে প্রতিষেধক নিচ্ছেন। পরে, পুলিশ পৌঁচে অবস্থা সামাল দেয়। বয়স্ক মানুষজন দীর্ঘক্ষণ রোদে লাইনে দাঁড়ানোর জেরে ধৈর্যচ্যুতিতে উত্তেজনা ছড়ায় মুরাড্ডিতও। পরে, তাঁদের পৃথক লাইনে দাঁড়নোর ব্যবস্থা করা হলে, সমস্যা মেটে।

এ দিকে, বিশেষ শ্রেণিভুক্ত অর্থাৎ, হকার, পরিবহণকর্মী ও সংবাদকর্মীদের প্রথম ডোজ় এবং অন্যদের দ্বিতীয় ডোজ়ের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ যথারীতি হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, ‘‘এ দিন জেলার ২০টি গ্রামীণ হাসপাতাল ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পুরুলিয়া শহরের দু’টি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ২২টি কেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার। তার অনেকটাই পূরণ হয়েছে।’’

এ দিকে, এ দিন নতুন করে করোনা প্রতিষেধক এসেছে বাঁকুড়া জেলায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় মোট সাড়ে ১৬ হাজার প্রতিষেধক পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে ১৫ হাজার ও কেন্দ্রের তরফে পাঠানো দেড় হাজার টিকা রয়েছে।

বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলাও ১৩ হাজার প্রতিষেধক পেয়েছে। এর মধ্যে রাজ্য সরকারের ১০ হাজার ও কেন্দ্রের পাঠানো ৩ হাজার প্রতিষেধক রয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তা জানান, সাধারণ মানুষকে এখনই প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় দেওয়া চালু করা যাচ্ছে না জেলায়। আপাতত পরিবহণকর্মী, হকার ও সংবাদকর্মীদের তা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের তরফে পাঠানো প্রতিষেধকগুলি রাজ্য সরকারের তরফে নির্দিষ্ট করে দেওয়া বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মানুষদেরই দেওয়া হবে। আর কেন্দ্রের পাঠানো প্রতিষেধকগুলি দ্বিতীয় ডোজ় হিসেবে
ব্যবহার করা হবে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় প্রায় ৯০ হাজার ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ়ের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ দিন বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় পরিবহণকর্মী ও হকারদের প্রতিষেধকের টিকার প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়েছে।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy