পরিবহণের কর্মী, হকার, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের করোনা প্রতিষেধক দেওয়া চলছেই। তবে, তাঁদের সঙ্গে প্রতিষেধক প্রাপকদের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন আরও বিভিন্ন পেশা ও বর্গের মানুষ।
তালিকা ও চাহিদা বাড়লেও প্রতিষেধকের জোগানই মূল সমস্যা। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারাও আড়ালে সে কথা বলছেন। ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের প্রতিষেধকের জোগান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। অন্য দিকে, ৪৪ ঊর্ধ্বদের প্রতিষেধকের জোগান দেয় কেন্দ্র। সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে কেন্দ্রের দেওয়া প্রতিষেধক বৃহস্পতিবারের পরে শেষ হয়ে যাবে। আজ শুক্রবারের প্রতিষেধক অনিশ্চিত। পাশাপাশি, রাজ্যের পাঠানো প্রতিষেধকও খুব সীমিত হয়ে পড়েছে। খুব বেশি হলে আরও দিন দুয়েক টিকারকরণ চালানো যাবে। বীরভূমের জেলাশাসক বিধানচনন্দ্র রায় বলছেন, ‘‘প্রতিষেধক চলে আসবে। কী অবস্থা, খোঁজ নিচ্ছি।’’
গত ১২ মে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশ আসে, পরিবহণ কর্মী, হকার এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা প্রতিষেধক পাবেন। দিন কয়েক পর থেকে প্রথমে পুর-এলাকায়, পরে গ্রামীণ এলাকায় টিকাকরণ শুরু হয়। কিন্তু, ১৮ মে-র শেষ নির্দেশিকা অনুয়ায়ী সেই তালিকায় জুড়ে গিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের বিভিন্ন পেশার মানুষ (সুপার স্প্রেডার), যাঁরা প্রতিদিন প্রচুর মানুষের সংস্পর্শে আসেন এবং যাঁদের মাধ্যমে দ্রুত কোভিড ছড়িয়ে যেতে পারে। শিক্ষক, ব্যাঙ্ককর্মী, পেট্রল পাম্প ও গ্যাস ডিলারের কর্মী, রেশন ডিলার ও কর্মীরা, আইনজীবী, ল’ক্লার্ক, পঞ্চায়েত ও পুরসভার নির্বাচিত প্রতিনিধি, ওষুধ ব্যবসায়ী ও কর্মী, যৌনকর্মী থেকে তৃতীয় লিঙ্গ—তালিকাটা দীর্ঘ।
কিন্তু, আসল সমস্যা প্রতিষেধকের অপ্রতুলতা নিয়েই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর-হাসপাতালগুলি ছড়াও জেলা, ব্লক, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা টিকাকরণ চলছে। তাতে বীরভূম স্বাস্থ্যজেলায় প্রতিদিন ৪০০০ জন এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় ২৩০০ জনকে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পনেরো দিনের মধ্যে দুই স্বাস্থ্যজেলায় এক লক্ষেরও বেশি জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বিপুল চাহিদা থাকায় সেই লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, চার হাজার জনের মধ্যে সোমবার ও মঙ্গলবার দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ৫৬২৫ জন ও ৬৫৯৭ জনকে। এমনকি ইয়াসের ভ্রুকুটি থাকা সত্ত্বেও বুধ ও বৃহস্পতিবার পাঁচ হাজারের বেশি জনের টিকাকরণ হয়েছে।
কিন্তু, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের প্রতিষেধক প্রায় শেষ। রাজ্যের কোটার ভ্যাকসিন থেকে আরও দু’দিন চলতে পারে। ফলে, প্রতিষেধক না-এসে পৌঁছলে সমস্যা আরও প্রকট হবে বলেই মনে করছেন বীরভূমে ভ্যাকসিনের নোডাল অফিসার তথা ডেপুটি সিএমওএইচ ৩ জয়ন্ত শুকুল। বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি অবশ্য বলেন, ‘‘জেনেছি দু-এক দিনের মধ্যেই প্রতিষেধকের বেশ কিছু ডোজ় চলে আসবে।’’