‘পোর্টাল’ খুলে বাঁকুড়ার নানা প্রান্তের করোনা আক্রান্তদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন পাত্রসায়রের বাসিন্দা, কিছু কলেজ পড়ুয়া। ‘কো হেল্প’ নামের পোর্টালটিতে হাসপাতালে ভর্তি, অক্সিজেন, রক্তদাতা ও প্রয়োজনে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগের হদিস মিলছে।
‘পোর্টাল’টির অন্যতম উদ্যোক্তা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কৃশাণু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত বছরে আমরা পঁচিশ জন বন্ধু মিলে কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজ শুরু করি। এ বারে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। মানুষ বুঝতে পারছেন না, কী করবেন? কোথায় কী পরিষেবা মিলবে? তাই এই পোর্টাল তৈরির ভাবনা।’’ পোর্টালটি তৈরি করেছেন কলকাতার একটি কলেজের বি টেক-এর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শৌভিক মুখোপাধ্যায় ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভাশিস দে। শৌভিকের কথায়, ‘‘কয়েক সপ্তাহ হল পোর্টালটি খুলেছি। প্রতিদিন গড়ে কুড়িটি ফোন আসছে সাহায্য চেয়ে। বাঁকুড়ার প্রায় সব হাসপাতালের তথ্য আমরা রাখছি।’’
শুভাশিসও জানান, বেশ কয়েকটি ফোন এসেছে অক্সিজেন কোথায় পাওয়া যাবে, তা জানতে চেয়ে। তাঁদের সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করানো হয়েছে। পোর্টাল তৈরিতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করা কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে প্যারামেডিক্যালের ছাত্র চন্দ্রনীল দাস ও শ্রীদীপ সাহাদের কথায়, ‘‘বাঁকুড়ার এক রোগীর আত্মীয় কলকাতার একটি হাসপাতাল থেকে রক্তের প্রয়োজনে ফোন করেছিলেন গত সপ্তাহে। আমাদের কলকাতার এক বন্ধুকে পাঠিয়ে দিই রক্ত দিতে। এ ছাড়া, পাত্রসায়রেও কোনও কোভিড রোগীর খাবার বা ওষুধের দরকার হলে আমরা তা পৌঁছে দিচ্ছি।’’ ইন্দাসের এক করোনা আক্রান্তের পরিবারের এক সদস্য জানান, বাড়ির এক বয়স্ক মানুষকে কোথায় ভর্তি করব বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পোর্টালের মাধ্যমে সাহায্য চেয়ে শেষমেষ ওন্দা কোভিড হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করতে পেরেছেন। পড়াশোনা সামলে কী ভাবে চলছে কাজ? কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজের বি টেক-এর প্রথম বর্ষের ছাত্রী নীলাঞ্জনা দে জানান, সকলে পালা করে রাত জাগছেন ফোন ধরার জন্য। তাঁর কথায়, ‘‘ক্লান্তি লাগে। তবে যখন কাউকে সাহায্য করতে পারি, সব ক্লান্তি চলে যায়। কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছি। যে ভাবেই হোক, করোনার বিরুদ্ধে জিততেই হবে।’’