E-Paper

অতিবৃষ্টি, আমন চাষে সঙ্কট

চাষিদের বড় অংশ জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে থাকায় বীজ ফেলে বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ০৭:১২
বর্ষার জলে ডুবে যাওয়া বীজতলা থেকে জল নিষ্কাশন করতে তৎপর এক চাষী পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের বামুনডিহা এলাকার তোলা ছবি।

বর্ষার জলে ডুবে যাওয়া বীজতলা থেকে জল নিষ্কাশন করতে তৎপর এক চাষী পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের বামুনডিহা এলাকার তোলা ছবি।

জুন এখনও শেষ হয়নি। তবে নিম্নচাপের জেরে এরই মধ্যে মাসিক গড় বৃষ্টির পরিমাণ ছাপিয়ে গিয়েছে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায়। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, পুরুলিয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে ১০৪ শতাংশ ও বাঁকুড়ায় ১০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এই অতিবৃষ্টির জেরে দু’জেলাতেই ব্যাহত হচ্ছে আমন চাষের প্রস্তুতি।

চাষিদের বড় অংশ জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে থাকায় বীজ ফেলে বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না। মাঝে কয়েক দিন বৃষ্টি থামলেও ফের অঝোর বৃষ্টিতে জল জমে বিপত্তি বাড়ছে। এ দিকে, যাঁরা বীজ ফেলেছিলেন, জমিতে জলজমে থাকায় তা-ও নষ্ট হতে শুরু করেছে। কৃষি দফতর জানাচ্ছে, পুরুলিয়ায় জুন মাসে গড়ে বৃষ্টি হয় ২৫২ মিলিমিটারের মতো। এ বারে এ পর্যন্ত তা হয়েছে ৩৯৬ মিলিমিটারের মতো। বাঁকুড়ার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। জুনের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৩৪৪ মিলিমিটারের কিছু বেশি। লক্ষণীয় যে, এই বৃষ্টি গোটা মাস জুড়ে হয়নি। মাঝে মধ্যে নিম্নচাপের জেরে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জল জমে বিপত্তি বাড়ছে।

আমন চাষিদের দাবি, জৈষ্ঠ্যের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মোটামুটি ভাবে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু সে সময়ে দু’জেলাতেই বৃষ্টির ঘাটতি ছিল। পরে কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়।তার পরেই অঝোর বৃষ্টিতে জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মানবাজারের মধুপুর গ্রামের চাষি রসরাজ রুহিদাস বলেন, “জমিতে বীজ ফেলার পরে চারা বার হতে শুরু করেছিল। তার পরে এই টানা বৃষ্টিতে সব চারাই নষ্ট হওয়ার মুখে।”

অনেকে আবার বাধ্য হয়ে কাদা জমিতেই বীজতলা তৈরি করছেন। ঝালদার খাটজুড়ির চাষি দিলীপ মাহাতো বলেন, “কাদা জমিতে বীজতলা তৈরি করছি বটে। কিন্তু এই জমিতে চারা পুষ্ট হয় না। প্রত্যাশিত ফলন হবে না।”

পুরুলিয়া ১ ব্লকের রুদড়া গ্রামের চাষি নবকুমার মাহাতো জানান, বীজতলা তৈরির পরে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে তা নষ্ট হয়েছে। পরে বাজার থেকে বীজ কিনে জমিতে লাগিয়েছিলেন। তবে ফের বৃষ্টি হয়েছে। এই ভাবে চললে চাষ আদৌ করা যাবে কি না, সন্দেহ। চাষিদের আরও আশঙ্কা, বীজতলা তৈরিতে দেরি হলে চারার বয়স বেড়ে যাবে। ফলন তখন অনেকটাই কম হবে। যদিও জেলার এক কৃষি আধিকারিক জানান, এখনও পুরোদমে বীজতলা তৈরির কাজশুরু হয়নি। বিশেষ ক্ষয়ক্ষতিরখবর নেই।

বাঁকুড়ায় মোটের উপরে ছবিটা এক। তবে জেলার চাষিদের একাংশের বক্তব্য, মূলত নিচু জমি এবং নদী ও সেচখালের পাশে থাকা জমিগুলিতেই বীজতলা তৈরিতে সমস্যা বেশি হচ্ছে। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা দেবকুমার সরকার বলেন, “বৃষ্টিতে আমন ধানের বীজতলার ক্ষতি হয়েছেবলে তেমন খবর নেই। তবে পরিস্থিতি নজর রাখা হচ্ছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia bankura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy