মৃতার বিপিএল আইডি ব্যবহার করে অন্য একজনকে ইন্দিরা আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। কাশীপুরের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের ইন্দ্রবিল গ্রামের ঘটনা। পাশের মণিহারা পঞ্চায়েতের বাইডি গ্রামেও এক ব্যক্তির বিপিএল আইডি ব্যবহার করে অন্য একজনকে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। দু’টি ক্ষেত্রেই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে এই প্রথম নয়, আগেও এই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এই প্রকল্পেই এক ব্যক্তির বিপিএল তথা গৃহ সমীক্ষা (আরএইচএস)র আইডি ব্যবহার করে অন্য একজনকে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণের টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ দু’টি পাওয়ার পরেই বিডিওকে ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট এলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, যাঁরা বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন, তাওরাও দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী। টাকা পেয়ে তাঁরা বাড়িও তৈরি করে ফেলেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে উপভোক্তাদের নাম ঠিক হয় গ্রাম সংসদের বৈঠকে। পঞ্চায়েতে সেই তালিকা জমা দেওয়ার পরে প্রধানের তাতে সম্মতি লাগে। তারপরে সেই তালিকা যায় ব্লক অফিসে। সেখান থেকে উপভোক্তাদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পর্যায়ক্রমে তিনটি কিস্তিতে টাকা পাঠানো হয়। বাড়ি তৈরির টাকা ঠিক ভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না তা পঞ্চায়েত দেখে। ফলে একজনের আইডি এমনকী মৃতা মহিলার আইডি ব্যবহার করে পঞ্চায়েতের মদত ছাড়া অন্য একজন ওই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারে না বলে সরব হয়েছে সিপিএম ও কংগ্রেস।
অভিযোগে জানানো হয়েছে, ইন্দ্রবিল গ্রামের বাসিন্দা সত্যদেবী মুখোপাধ্যায় সাত-আট বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু তাঁর আরএইচএস আইডি ব্যবহার করে বছর দেড়েক আগে ওই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন ওই গ্রামেরই হরিপদ টুডু। সিপিএমের ইন্দ্রবিল শাখার সহ-সম্পাদক দুলাল বাউরির দাবি, ‘‘হরিপদবাবু দরিদ্র। তাই তাঁকে ইন্দিরা আবাসের সুবিধা দেওয়ায় কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু বারবার বেনিয়ম হচ্ছে বলে সন্দেহ কোনও অসাধু চক্র একের আইডি ব্যবহার করে অন্যকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে।” তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে অভিযোগ করেছেন।
বাইডি গ্রামের বৃন্দা বাউরির আইডি কাজে লাগিয়ে ওই গ্রামের বুধন বাউরিকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের মণিহারা অঞ্চল সভাপতি সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বৃন্দাদেবী ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও ভাবে বাস করছেন। আর তাঁর স্বামী মথুর বাউরির ছেলে হিসেবে বুধন বাউরিকে দেখিয়ে তাঁকে টাকা দিয়ে অন্যায় করা হয়েছে।’’ দুই টাকা প্রাপক এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত ওই দুই পঞ্চায়েত সব জেনেই এই কাজ করেছে।
যদিও দু’টি ক্ষেত্রেই তাদের তরফে ভূল হয়নি বলে পাল্টা দাবি করছে তৃণমূল পরিচালিত গৌরঙ্গডি ও মণিহারা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তবে মহকুমাশাসকের আশ্বাস, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ঘটনা ঘটানো হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy