Advertisement
২৯ মে ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গির সঙ্গে লড়াইয়ে ব্লক যেন নিধিরাম সর্দার

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে পুরলিয়াতে ১৮ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তার মধ্যে ছ’জন পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা। এক জন রঘুনাথপুর পুর এলাকার। বাকি ১১ জনই বিভিন্ন ব্লক এলাকার গ্রামে থাকেন। তার মধ্যে রয়েছে, পুরুলিয়া ১, পুরুলিয়া ২, মানবাজার ২ ও পাড়া ব্লকের নাম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫০
Share: Save:

শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে গ্রামেও থাবা বসাচ্ছে ডেঙ্গি। কিন্তু মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কোন পরিকাঠামোই নেই জেলার ব্লকগুলিতে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে পুরলিয়াতে ১৮ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তার মধ্যে ছ’জন পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা। এক জন রঘুনাথপুর পুর এলাকার। বাকি ১১ জনই বিভিন্ন ব্লক এলাকার গ্রামে থাকেন। তার মধ্যে রয়েছে, পুরুলিয়া ১, পুরুলিয়া ২, মানবাজার ২ ও পাড়া ব্লকের নাম।

ডেঙ্গি বা মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের খবর পেলেই পুরসভাগুলি এলাকায় গিয়ে মশা মারার তেল ছড়ায়। মশার লার্ভা মারতে ফগিং মেশিন থেকে ধোঁওয়া দেওয়া হয়। কিন্তু পঞ্চায়েত দূর অস্ত, জেলার কোনও পঞ্চায়েত সমিতিতেই ফগিং মেশিন নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে— পরিকাঠামো না থাকায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কতটা কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারবে ব্লক বা পঞ্চায়েত সমিতিগুলি?

পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাইরে থেকে ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, কিন্তু মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে গ্রামাঞ্চলে মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।” কিন্তু কী ভাবে? এই প্রশ্নই ঘুরছে প্রশাসনের অন্দরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির মন্তব্য, ‘‘শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তব। ডেঙ্গির মত রোগ নিয়ন্ত্রণে আমাদের অবস্থা অনেকটা নিধিরাম সর্দারের মতোই।” কিছু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা জানাচ্ছেন, এলাকায় মাশাবাহিত রোগ ছড়াচ্ছে খবর পেলে লোক লাগিয়ে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হচ্ছে। এলাকায় ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে যে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া পুরো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, সে কথা মানছেন তাঁরা। ব্লক এলাকার মধ্যে আবার বেশ কিছু এলাকা পুরোপুরি শহরাঞ্চল। সেখানে নর্দমা পরিস্কার না হওয়া, ঘিঞ্জি বসতি এলাকায় জল জমা প্রভৃতি সমস্যা পুরোদস্তুর রয়েছে। ফলে মশা বাহিত রোগের ভয়ও রয়েছে ষোলোআনা। ফলে মশা মারতে কার্যত দিশাহারা অধিকাংশ পঞ্চায়েত সমিতি।

কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া, রঘুনাথপুর ১-এর কৃষ্ণ মাহাতো, পাড়ার সীমা বাউড়িরা জানাচ্ছেন, মশা মারার পরিকাঠামোর জন্য জেলা প্রশাসনের মুখ চেয়ে রয়েছেন তাঁরা। সৌমেনবাবুরা বলেন, ‘‘মাশা মারার স্প্রে মেশিন আর ফগিং মেশিনে ব্যবস্থা করার জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন করা হবে।”

তবে পুরুলিয়া জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়ের দাবি, ইতিমধ্যেই সমস্ত ব্লক, এমনকী পঞ্চায়েতগুলিকে মশা মারার ফগিং মেশিন কিনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ফগিং মেশিনের দাম খুব বেশি নয়। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি সহজেই সেগুলি কিনতে পারবে। কোন তহবিল থেকে কেনা হবে, কোথা থেকে কেনা হবে সব জানিয়ে দ্রুত যন্ত্রগুলি কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

অবশ্য কিছু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবি, এই ধরণের কোনও নির্দেশ এখনও তাঁদের হাতে এসে পৌঁছয়নি।

আক্রান্ত যেখানে

• পুরুলিয়া ১

• পুরুলিয়া ২

• মানবাজার ২

• পাড়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Mosquito Purulia ডেঙ্গি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE