বেড়েছে সোনার দাম। কিন্তু তার পরেও জেলা জুড়ে অক্ষয় তৃতীয়ায় দিন সোনার দোকানে ভিড় হল। তবে সোনা কেনার পরিমাণ কমই থাকল। তবে দাম বাড়ায় মূল্যের দিক থেকে বিক্রি সন্তোষজনক বলে জানাচ্ছেন জেলার ব্যবসায়ীরা।
সিউড়ি, বোলপুর, রামপুরহাট— তিনটি মহকুমাতেই এ দিন সোনার দোকানে ভিড় ছিল। বিক্রেতাদের দাবি, সোনার দাম বাড়ায় কেউ কেউ নিজেদের বাজেট বাড়াচ্ছেন, কেউ কেউ কম সোনা কিনছেন। বিয়ের মরসুম থাকায় অনেক এ দিন বিয়ের গয়নাও কিনেছেন।সব মিলিয়ে সোনার বিক্রি বেশ সন্তোষজনক বলে দাবি বিক্রেতাদের।
এ দিন জেলার বাজারে ২২ ক্যারেট গয়না সোনার ১০ গ্রামের দাম ছিল ৯০,২৪০ টাকা। গয়না কেনার ক্ষেত্রে এর সঙ্গে জিএসটি ও মজুরি যুক্ত হয়ে এ দিন প্রতি ১০ গ্রাম সোনার গয়নার দাম ছিল ১,০৮,৩০০ টাকা। তবে এর পরেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা জুড়ে সোনার দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে। গয়না বিক্রেতাদের দাবি, ধনতেরাস ও অক্ষয় তৃতীয়ায় যাঁরা সোনা কেনেন, তাঁরা যে কোনও মূল্যেই সোনা কিনবেন। একই দাবি ক্রেতাদেরও। এই বিশেষ দিনটিতে অল্প পরিমাণ হলেও সোনা কিনতেই হবে বলে জানান তাঁরা। আর মানুষের এই বিশ্বাসের উপর ভর করেই লাখ টাকার গণ্ডি পেরিয়েও অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ঊর্ধ্বমুখী জেলার সোনার বাজার।
এ দিন সিউড়ির একটি সোনার দোকানের মালিক বর্ণালী মুখোপাধ্যায় বলেন, “সোনার দাম যত বাড়ে, সোনার বিক্রিও বাড়ে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সোনার দাম বাড়লে বাজারের অন্য লগ্নির পরিবর্তে সাধারণ মানুষ সোনার উপরেই বেশি করে লগ্নি করতে চান। ফলে, সার্বিক ভাবে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়।” যদিও একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘সোনার সার্বিক বিক্রি বাড়লেও অনেকেই অল্প পরিমানে সোনা কিনছেন৷ অনেকেই এখন হালকা গয়নার দিকেই ঝুঁকছেন বেশি।’’ তবে দুবরাজপুরের এক প্রতিষ্ঠিত অলঙ্কার ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘মোটামুটি কেনাবেচা হয়েছে। সোনার দাম বাড়াটাই মূল কারণ।’’
জলি হাজরা মণ্ডল নামে সিউড়ির এক বাসিন্দা এ দিন সোনা কিনতে দোকানে এসেছিলেন৷ তিনি বলেন, “প্রতি বছরই এ দিনে আমি সোনা কিনি৷ এখন দাম বেশি থাকায় অল্প পরিমাণ সোনা কিনলাম৷ কিন্তু দাম যতই বেড়ে যাক, অক্ষয় তৃতীয়া ও ধনতেরাসের দিন সোনা কেনা বন্ধ করব না।” আগামী বছর বিয়ে রয়েছে সিউড়ির শুঁড়িপুকুর পাড়ার অঙ্গনা দাসের। সোনার দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় তড়িঘড়ি বিয়ের গয়না কিনতে শুরু করেছেন অঙ্গনা ও তাঁর মা। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেও কয়েকটি গয়না কেনেন তাঁরা৷ অঙ্গনা বলেন, “বিয়েতে সাবেক সোনার গয়নার কোনও বিকল্প হয় না। তাই কিছুটা কম ওজনের গয়না কিনছি। অক্ষয় তৃতীয়ায় একটা গয়না কিনব না, এটা তো হতেই পারে না।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)