Advertisement
E-Paper

বালি দামী, শৌচাগার নিয়ে চিন্তা

বিভিন্ন বালিঘাটের ইজারাদারদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, বছরের অন্য সময়ে খোলা বাজারে ১০০ ঘনফুট বালির দর ১,০০০ টাকার আশেপাশে থাকে। এখন সেটাই বেড়ে হয়েছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। 

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫৬
স্তূপ: মজুত করা রয়েছে বালি। বিষ্ণুপুর স্টেশনের কাছে জাতীয় সড়কের পাশেই। ছবি: শুভ্র মিত্র

স্তূপ: মজুত করা রয়েছে বালি। বিষ্ণুপুর স্টেশনের কাছে জাতীয় সড়কের পাশেই। ছবি: শুভ্র মিত্র

আগামী অক্টোবরের মধ্যে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি শৌচাগার গড়ার কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু সেই গুড়ে বালি পড়ার জোগাড়! অগত্যা বিভিন্ন বালিঘাটের ইজারাদারদের দ্বারস্থ হল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।

বাঁকুড়া জেলা জুড়ে এখন বালির আকাল চলছে। খোলা বাজারে দর আকাশ ছুঁয়েছে। বর্ষায় বাড়ি তৈরির কাজ যাঁরা শুরু করেছিলেন, তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। অনেক সরকারি নির্মাণ প্রকল্পও বন্ধ। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরি কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর কয়েক মাসের মধ্যেই মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের সময়সীমা শেষ হয়ে যাবে। এ দিকে জেলা জুড়ে এখনও লক্ষাধিক বাড়িতে শৌচাগার বানানো বাকি।

প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী অক্টোবরে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তবে কাজের যা গতি, তাতে ওই সময়ের মধ্যে বাঁকুড়া জেলার সব বাড়িতে শৌচালয় গড়া যাবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বর্ষার জন্য গত ১৭ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নদী থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকেই জেলার খোলা বাজারে বালির দর কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন বালিঘাটের ইজারাদারদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, বছরের অন্য সময়ে খোলা বাজারে ১০০ ঘনফুট বালির দর ১,০০০ টাকার আশেপাশে থাকে। এখন সেটাই বেড়ে হয়েছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।

কেন? ইজারাদারদের একাংশের ব্যাখ্যা— আগে নদী থেকে বালি তুলে সরাসরি বিক্রি করতে দিতেন। এক বারই চালান কেটে, গাড়িতে বালি বোঝাই করলে কাজ শেষ। বালি চলে যায় ক্রেতার কাছে। মজুত বালির ক্ষেত্রে ঝঞ্ঝাট অনেক বেশি। একবার নদী থেকে বালি তুলতে হয়। চালান কেটে বোঝাই করতে হয় গাড়িতে। তার পরে নিয়ে গিয়ে মজুত করতে হয়। বিক্রির সময়ে আবার এক দফা চালান, আবার গাড়িতে বালি ভরার খরচ। এর জন্যই খোলা বাজারে দর বাড়ছে বলে তাঁদের দাবি।

এই পরিস্থিতিতে কাজে গতি আনতে কোমর বেঁধে নেমেছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, অগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলায় ৪০ হাজার শৌচালয় গড়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেই হিসেবে বালি লাগবে প্রায় ১১ লক্ষ ঘনফুট। জেলার ইজারাদারদের কাছে প্রায় ৩৩ লক্ষ ঘনফুট বালি মজুদ রয়েছে।

অভাব নেই। কিন্তু দর চড়া! বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব) সব্যসাচী সরকার বলেন, “শৌচাগার গড়তে বালি ঘাটের ইজারাদারদের থেকে আমরা পূর্ত দফতরের নির্ধারিত মূল্যে বালি কিনব। এই ব্যাপারে ইজারাদারদের সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।” বুধবার জেলা শাসকের দফতরে বালিঘাটের ইজারাদারদের সঙ্গে একটি বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভালো, মাঝারি ও নিম্ন মানের বালির ভিত্তিতে দর ঠিক করা হয় দফতরের তরফে। সেক্ষেত্রে প্রতি ১০০ ঘনফুটের দাম ১,০০০ থেকে ১,৭০০ টাকা হয়ে থাকে। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) নবকুমার বর্মন বলেন, “জেলার সমস্ত বিডিওকে শৌচাগার বানানোর লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে কতটা বালি লাগবে তার হিসেব ব্লক ও জেলার ভূমি রাজস্ব দফতরে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভূমি ও রাজস্ব দফতর বালিঘাট মালিকদের কাছ থেকে বালি কেনার ব্যবস্থা করে দেবে।”

বাঁকুড়া জেলাশাসক উমাঙ্কর এস বলেন, “সরকারি কাজে সাহায্যের জন্য জেলার বালিঘাটের ইজারাদারদের এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে ইজারাদারদের একাংশের বক্তব্য, “বালি দিতে তো আমাদের হবেই, তবে নির্ধারিত মূল্যে এখন মজুত বালি বিক্রি করতে গেলে লোকসানও বেশ কিছুটা হবে।”

Bankura Sand Crisis Mission Nirmal Bangla
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy