প্রতীকী ছবি
বাস মালিকদের দাবি মতো, ভাড়া বাড়াতে সম্মত না হলেও রাজ্য সরকার বাসে বেশি যাত্রী তোলার অনুমতি দিয়েছে। এত দিন পর্যন্ত ২০ জন যাত্রী নিয়ে ছুটছিল সরকারি ও বেসরকারি বাস। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ বার থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাসে যত আসন, তত জন যাত্রী উঠতে পারবেন। তবে কেউ দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন না। বাসে ওঠার ক্ষেত্রে কন্ডাক্টরদের জোরাজুরিও করতে পারবেন না। যদিও আজ, সোমবার থেকে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার মধ্যে বেসরকারি বাস নামবে কি না, তা নিয়ে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সংশয় কাটেনি।
‘পুরুলিয়া জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমরাও পরিষেবা শুরু করতে চাই। সে কথা আমরা জেলা পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছি। যাত্রীদের চাহিদা থাকায় সোমবার থেকে পুরুলিয়া-কলকাতা রুটের বাস চালু করা হবে।’’ কিন্তু জেলার মধ্যে বেসরকারি বাস নামবে কি না, স্পষ্ট করতে পারেননি তিনি। প্রতিভারঞ্জনবাবুর দাবি, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরে কয়েকটি রুটে কিছু বাস চালানো হয়। কিন্তু একেবারেই যাত্রী নেই। তাছাড়া জেলায় করোনা-সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় বাসের কর্মীরাও আতঙ্কে রয়েছেন। এই অবস্থায় অনেকেই কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সোমবার দেখি কী হয়!’’ পুরুলিয়ার জেলা পরিবহণ আধিকারিক নীলেশ দে আশাবাদী সুরে দাবি করেছেন, ‘‘সোমবার থেকে জেলার মধ্যে বেসরকারি বাস পথে নামবে বলেই ঠিক হয়েছে।’’
এ দিকে বাঁকুড়া জেলা বাস মালিকেরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে তাঁরা পথে বাস নামানোর অবস্থায় নেই। ‘বাঁকুড়া জেলা বাসমালিক কল্যাণ সমিতি’-র সম্পাদক সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাস চালানোর বিষয়ে সরকারের তরফে লিখিত ভাবে এখনও নির্দেশিকা আমরা হাতে পাইনি। ওই নির্দেশিকা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা বাস চালানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। পথে নানা সমস্যার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।”
যদিও বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, “বেসরকারি বাস চালানোর ব্যাপারে আমরা বাস মালিকদের সঙ্গে আগেও কয়েক দফা আলোচনা করেছি। যাতে দ্রুত বাস পরিষেবা চালু করা হয়, সে জন্য বাস মালিকদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি আমরা।”
বাঁকুড়া জেলার বাস মালিকদের বড় অংশেরই দাবি, প্রায় দু’মাস ধরে বাসগুলি অচল হয়ে পড়ে থাকায় যন্ত্রাংশে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাস নামানোর আগে তাই প্রয়োজনীয় মেরামত করা জরুরি। সে জন্য সময় দরকার। এ ছাড়া ‘লকডাউন’-এ ছাড় দেওয়া হলেও জনজীবন এখনও স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন না তাঁরা। ফলে যাত্রী তেমন না-ও মিলতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। জেলার এক বাস মালিক বলেন, “বাস মালিকদের তরফে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি তোলা হয়েছিল। রাজ্য সরকার সেই দাবি নাকচ করেছে। বিকল্প সুবিধা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়নি। এই অবস্থায় বাসে যাত্রী না পেলে আমরা লোকসানের মুখে পড়ব।”
দুই জেলায় সরকারি বাস পরিষেবা শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। ২৭ মে থেকে পুরুলিয়া-কলকাতা রুটেও শুরু হয়েছে সরকারি বাস পরিষেবাও। তারপরেও জেলার মধ্যে বাস না চালু হওয়ায় অফিস বা নানা কাজে যাওয়া মানুষজন দুঃশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের ব্যবসায়ী সন্দীপ রায়, কাশীপুরের বাসিন্দা দিব্যেন্দু হালদারের কথায়, ‘‘আসানসোলের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখলে ব্যবসা চলবে না। কিন্তু বাস চালু হলেও এখন তাতে ওঠা নিরাপদ কি না, সংশয়ে রয়েছি। দেখা যাক কী হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy