Advertisement
০২ মে ২০২৪
Visva Bharati

Visva Bharati: প্রজাপতি উদ্যান ধ্বংসের মুখে, কমেছে ‘অতিথিদের’ সংখ্যা, অভিযোগ বিশ্বভারতীর দিকে

পর্যটকদের জন্য আরও সাজানো হবে ভাস্কর্য গ্যালারি, অর্কিড গার্ডেন। কিন্তু কিছুই হয়নি।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ২৩:১৫
Share: Save:

বিশ্বভারতীর নাট্যঘরের পিছনে লালবাঁধ ঝিলের পাড়ে তৈরি হয়েছিল প্রজাপতি ও অর্কিড উদ্যান। ২০১৪-র ৯ অগস্ট তৎকালীন উপাচার্য সুশান্ত দত্ত গুপ্ত তার উদ্বোধন করেছিলেন। তারপর আস্তে আস্তে সেই প্রজাপতি উদ্যান (বাটারফ্লাই পার্ক) পরিচর্যার অভাবে ধংসের মুখে চলে গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সে সময় এই উদ্যানের শোভা বাড়াতে সংযুক্ত করা হয়েছিল বিশ্বভারতীর কলাভবনের ছাত্র ছাত্রীদের ভাস্কর্য। ঘোষণা করা হয়েছিল, পর্যটকদের জন্য আরও সাজানো হবে ভাস্কর্য গ্যালারি, অর্কিড গার্ডেন। কিন্তু কিছুই হয়নি।

অভিযোগ, উদ্যান ও ঝীলকে আলাদা করে প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে। উদ্যানের ভিতর ক্রমাগত ফেলে মেরে ফেলা হচ্ছে প্রজাপতির ‘হোস্ট প্লান্ট’ (যে গাছের পাতায় প্রজাপতি ডিম পাড়ে এবং লার্ভারা সেই পাতা খেয়ে বড় হয়)। এদেশে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির প্রজাপ্রতি দেখা মেলে। তার প্রায় অর্ধেক, ৬০০ রকম প্রজাপতি পশ্চিমবঙ্গে মেলে।

প্রজাপতি গবেষক সমীরণ নন্দী জানান, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার প্রজাপতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শান্তিনিকেতনে বর্ষা ও শীতকালে পরিযায়ী প্রজাপতির দেখা মেলে। এদের প্রত্যেকে একটি করে নির্দিষ্ট গাছে প্রজনন করে। তাদের ‘হোস্ট প্লান্ট’ বলে থাকি।’’ তাঁর কথায় শান্তিনিকেতনের লালবাঁধ ঝিল লাগোয়া জঙ্গল প্রজাপতির প্রাকৃতিক উদ্যানে বছরে দু’বার ১০ থেকে ১১ রকমের পরিযায়ী প্রজাপতি আসে। একই সাথে ৬০ রকম প্রজাপতিদের দেখা মিলে। যার মধ্যে অন্যতম ব্লু টাইগার, কমন এমিগ্রেন্ট, কমন রোজ, পেইন্টেড লেডি, কমন ক্রো, লেমন প্যানজি, প্লেন টাইগার, ফাইব-বার সোড টেল, কমন মর্মন, টনি কোস্টার প্রভৃতি। অনেক প্রজাপতি এই আসার পথে দু’-তিন প্রজন্ম গড়িয়ে যায়!

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

স্থানীয় প্রজাপতিপ্রেমী শুভাশিস মিত্র প্রজাপতি উদ্যানের বেহাল দশা সম্পর্কে বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী আর রবীন্দ্র আর্দশ মেনে চলে না। উপাচার্য পরিবর্তনের ফপ দেখা যাচ্ছে প্রজাপতি উদ্যানে। কংক্রিট দিয়ে ঘিরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধংস করা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় যে উন্মুক্ত পরিবেশকে বেছে নেওয়া হয়েছিল, তা আজ উধাও।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এর চেয়ে বন ধফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিলে হয়ত এ ভাবে ধংসের পথে যেত না বিশ্বভারতীর প্রজাপতি উদ্যান।

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘বর্তমানে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ রবীন্দ্র-চিন্তা অনুসরণ করেন না, পরিবেশের কথাও ভাবে না। গতানুগতিক ক্যাম্পাস চালিয়ে যান। পরিবেশের কথা তাঁরা ভাবছে না। আমি প্রজাপতি উদ্যান ঘুরে দেখব, আর আইনি পদক্ষেপ করার প্রয়োজন হলে অবশ্যই করব।’’ বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati Butterfly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE