বিকল হওয়ার এক সপ্তাহ পরেও বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার না বদলানোর প্রতিবাদে পথ অবরোধ করলেন বাসিন্দারা। শনিবার বিকেলে নানুরের নতুনাপাড়া সংলগ্ন সাব-স্টেশনের কাছে নানুর-বোলপুর সড়কের ঘটনা। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দফতরের আশ্বাসে পরে অবরোধ প্রত্যাহার করেন বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝড়-জলের জেরে ট্রান্সফর্মার পুড়ে যাওয়ায় গত রবিবার থেকে বিদ্যুৎ নেই নানুর পঞ্চায়েতের আগোত্তর গ্রামে। ওই গ্রামের বাসিন্দা বাপি শেখ, জামাল শেখ, সাদ্দাম শেখরা জানান, গ্রামে প্রায় ২৫০টি বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। রয়েছে তিনটি মসজিদ ও একটি মাদ্রাসাও। গ্রামের ৬৩ কেভির একমাত্র ট্রান্সফর্মারটি বিকল হওয়ার পর থেকে দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘দিনের বেলা অসহ্য গরম এবং সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে ডুবে থাকে গোটা গ্রাম। রমজান মাসে গ্রামের বয়স্ক সদস্যেরা খুবই কষ্টে পড়েছেন।’’ বাসিন্দাদের দাবি, ট্রান্সফর্মা পুড়ে যাওয়ার পরে নানুর পাওয়ার সাপ্লাই অফিস এবং কীর্ণাহারা ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসে সারানোর আর্জি জানানো হয়। কিন্তু, প্রায় সাত দিন হতে চললেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে, বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা এসে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফের বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে তাঁদের গ্রাম। ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, দফতরের কর্তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দিন দুয়েকের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু, গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি। বধূ হাফিজা বিবি, নুরজাহান বিবি এবং বাসিন্দা শেখ আম্বিয়া, ভোলা শেখরা বলেন, ‘‘একে গরমকাল, তার উপর রমজান মাস। খুবই কষ্টের মধ্যে দিন যাচ্ছে।’’ গ্রামের মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি শরিফ আহমেদ বলেন, ‘‘সন্ধ্যার নমাজ এক ঘণ্টার বেশি হওয়ায় গরমে বয়স্ক মানুষেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীরা বাধ্য হয়েই এ দিন নানুর ইলেকট্রিক সাব স্টেশনে বিক্ষোভ ও পথ অবরোধ করেন।’’
এ দিন দুপুর আড়াইটে থেকে ৩টে পর্যন্ত চলা অবরোধে যদিও বিভিন্ন রুটের বাস ছাড়াও বহু যানবাহন আটকে পড়ে। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে সাব-স্টেশনের অপারেটর আসিফ জামাল ফৈজি বলেন, ‘‘বিদ্যুতের ইনকামিং ও আউটগোয়িং দেখভাল করা ছাড়া আমাদের কোনও এক্তিয়ার নেই। গ্রামবাসীদের সমস্যা এবং আর্জির বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ নানুর থানার পুলিশের মধ্যস্থতায় এবং সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ দফতরের আশ্বাসে বিকেল ৩টে নাগাদ পথ অবরোধ প্রত্যাহার করেন বাসিন্দারা। সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ দফতরের কীর্ণাহারের এস এস অর্ণব বড়ুয়া বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে গ্রামবাসীদের কাছে ট্রান্সফর্মার পুড়েছে খবর পেয়েছি। মেরামতের ব্যবস্থা হয়েছিল। আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’