Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪

কবর থেকে প্রৌঢ়ের দেহ তুলে ময়নাতদন্ত 

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। মৃতের পরিবারের দাবি ছিল, সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

তদন্ত: কবর থেকে তোলা হচ্ছে দেহ। মুরারইয়ে। নিজস্ব চিত্র

তদন্ত: কবর থেকে তোলা হচ্ছে দেহ। মুরারইয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুরারই শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৭
Share: Save:

সাঁইথিয়ার বহরাপুরের পর মুরারইয়ের ভাদীশ্বর। চলতি বছরে ছ’মাসের ব্যবধানে আদালতের নির্দেশে দু’বার কবর থেকে দেহ তোলার ঘটনা ঘটল। বহড়াপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাহাসিনা খাতুনের মৃত্যুর ১৮দিন পর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়। ভাদীশ্বরে একই ভাবে মুরারই-১ ব্লকের বিডিওর উপস্থিতিতে শুক্রবার দুপুরে তোলা হল স্থানীয় বাসিন্দা বুধু শেখের (৫২) দেহ।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। মৃতের পরিবারের দাবি ছিল, সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রতিবেশীদের সন্দেহ ছিল গোড়া থেকে। বুধু শেখকে ধান সিদ্ধ করার উনুনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখার কথাও পুলিশকে জানিয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। এলাকাবাসী আদালতের দ্বারস্থ হলে ঘটনার প্রায় তিন মাস পরে রামপুরহাট আদালত কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়।

এ দিন কবরস্থানে জনতার ভিড় ঠেকাতে পুলিশকে হিমসিম খেতে হয়। সকাল থেকেই কবরস্থান ঘিরে রাখে মুরারই থানার পুলিশ। বেলা ১২টা নাগাদ বিডিও নিশীথভাস্কর পাল ও ওসি নীলরতন ঘোষের উপস্থিতিতে কোদাল, বেলচা দিয়ে কবরের মাটি তুলে দেহটি বের করা হয়। এ দিন দেহ কবর থেকে তোলা হলেও মৃতের পরিবারের লোকজনকে কবরস্থান বা বাড়িতে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশ শোনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ওই পরিবার। বিডিও বলেন, “আদালতের নির্দেশ পেয়ে মৃতদেহ কবর থেকে তুলে রামপুরহাট মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বোঝা যাবে আসল ঘটনা। তখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বুধু শেখের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে যাঁরা গোড়া থেকেই অভিযোগ করেছেন তাঁদের একজন স্থানীয় বাসিন্দা এন্দাদুল হক। তিনি বলেন, ‘‘ভোরবেলা বুধুর বাড়ি থেকে চিৎকার শুনে গিয়েছিলাম। বুধু ধান সিদ্ধ করার উনুনে মাথা গুঁজে পড়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী মটরি বিবি ও বড় ভাই চাঁদু শেখ মাথায় জল ঢালছিলেন। বুধুর মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল। গামছা দিয়ে বেঁধে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করছিল ছেলে, স্ত্রী এবং ভাইেরা। লোকজন জড়ো হতেই মৃতের ছেলে মিছিল শেখ,

ছোট ভাই ফটিক শেখ ও বড় ভাই চাঁদু মিলে বুধুকে ঘরে ঢুকিয়ে নেয়।’’ আর এই ঘটনাই প্রশ্ন তুলেছিল মৃত্যুর কারণ নিয়ে।

বাসিন্দারা একজোট হয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তাতে বিশেষ সুরাহা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মানবাধিকার সংগঠনের পরামর্শে আদালতের দ্বারস্থ হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান শোনার পর আদালত মুরারই থানার

পুলিশকে দেহটি তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Murarai Grave
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE