তৃণমূল-সিপিএমের বিবাদের জেরে স্থগিত হয়ে গেল রঘুনাথপুর ১ ব্লকের আদিবাসী সমবায় সমিতি বা ল্যাম্পস-এর পরিচালন সমিতির নির্বাচন।
সিপিএমের দাবি, পরিচালন সমিতি তাদের দখলে আসছে না দেখে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতোর নেতৃত্বে শাসকদলের বহিরাগত লোকজন পঞ্চায়েত সমিতিতে ঢুকে ঝামেলা পাকিয়ে নির্বাচন বানচাল করে দিয়েছে। তাদের কয়েকজন নির্বাচিত সদস্যকে তৃণমূলের লোকজন মারধর করেছে বলেও পুলিশ-প্রশাসনে অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। সিপিএমের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে তারা। রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি বলেন, ‘‘আদিবাসীদের সমর্থন আমাদের দিকেই আছে। ভোটে জেতা কয়েক জনকে সিপিএম তাদের সমর্থক বলে দাবি করলেও আদতে তাঁরা তৃণমূলের সমর্থক। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট আমাদের দিকে পড়ছে দেখে সিপিএমই গণ্ডগোল পাকিয়ে সভা বানচাল করেছে।’’
বিডিও (রঘুনাথপুর ১) পূর্বিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি হওয়ায় ল্যাম্পসের পরিচালন সমিতির নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। পুরো রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে।”
জেলার অন্যত্র ল্যাম্পসগুলির নির্বাচনে সিপিএম পর্যুদস্ত হলেও ব্যতিক্রম ছিল রঘুনাথপুর ১ ব্লকের ল্যাম্পসটি। গত মাসে এখানে ৪৪টি আসনের মধ্যে ২৬টিতে জিতেছিল সিপিএম। বাকি ১৮টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। বুধবার ছিল ল্যাম্পসের পরিচালন সমিতির নির্বাচন। সিপিএমের অভিযোগ, প্রথম থেকেই পরিকল্পিত ভাবে ঝামেলা পাকানোর চেষ্টায় ছিল শাসকদল। ঘটনা হল, এ দিনের নির্বাচন প্রথমে ব্লক অফিস লাগোয়া ল্যাম্পসের কার্যালয়ে হওয়ার কথা থাকলেও স্থান বদল করে আনা হয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতি অফিসের সভাগৃহে। সিপিএমের সদস্যেরা প্রথমে ল্যাম্পসের কার্যালয়ে তালা বন্ধ দেখে গিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন। পরে খবর পেয়ে সভাগৃহে আসেন।
সিপিএমের রঘুনাথপুরের জোনাল কমিটির সম্পাদক সুনীল গরাইয়ের অভিযোগ, ‘‘এ দিন দুপুরে নির্বাচন শুরুর আগে থেকেই কৃষ্ণবাবুর নেতৃত্বে যুব তৃণমূলের নেতা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ল্যাম্পসের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন কিছু তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সভাগৃহের বাইরে ভিড় জমিয়েছিল। পরে তারাই সভাগৃহে ঢুকে আমাদের কর্মীদের মারধর করে বের করে দেয়।” সিপিএমের আরও দাবি, নির্বাচনের পর থেকেই তাদের সদস্যদের প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে নিজেদের দিকে টানতে সচেষ্ট হয়েছিল শাসকদল। তাতে সফল না হয়ে হার নিশ্চিত জেনে পরিচালন সমিতির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গণ্ডগোল পাকিয়ে নির্বাচন স্থগিত করে দিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন কোরাম গঠিত হওয়ার পরে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভোটদান অনেকটাই হয়েছে। ৪৪টি ভোটের মধ্যে ৩২টি পড়েছিল। তার পরেই গণ্ডগোল শুরু হয়। ঝামেলার খবর পেয়ে ব্লক অফিসে চলে আসেন এসডিপিও (রঘুনাথপুর) অভিজিৎ চৌধুরী। বড় ধরনের গণ্ডগোল এড়াতে নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy