এই জমিতেই দুর্ঘটনা। নিজস্ব চিত্র।
ধানজমিতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের অযোধ্যা পঞ্চায়েতের ধরাপাট গ্রামে। পুলিশ জানায়, মৃত নাম শ্যামলী বাউরি (৪০)। গোটা ঘটনায় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিন পথ অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখানো হয়। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অবশ্য দাবি, জমিতে তার পড়ে থাকার খবর এলাকা থেকে তাদের কেউ জানাননি।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্যামলী খেতমজুরের কাজ করতেন। এ দিন সকালে গ্রামের জমিতে কাজ করতে যান। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ঝড়ে পোস্ট হেলে পড়ায়, সপ্তাহখানেক ধরে ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ পরিবাহী চারটি তার ওই জমিতে পড়েছিল। এ দিন জমির ধান সরাতে গিয়ে, সেই বিদ্যুতের তারে হাত পড়ে যায় শ্যামলীর। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। শ্যামলীর শ্বশুর জীবন বাউরির অভিযোগ, ‘‘ছ’-সাত দিন ধরে বিদ্যুতের তার জমিতে পড়েছিল। গ্রামের লোক জানিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ দফতর বিষয়টি গুরুত্ব দিলে, এই দুর্ঘটনা ঘটত না।’’
এ দিন ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করেন। তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় কোনও অভিযোগ জানাতে গেলে, ফোনের লাইন কার্যত পাওয়া যায় না। যদিও কখনও ফোনের লাইন মেলে, তখন অন্য নানা জায়গায় ফোন করার পরামর্শ দিয়ে হয়রান করা হয় বলেও তাঁদের দাবি। বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেবনাথ বাউরির প্রশ্ন, ‘‘চার-চারটি বিদ্যুতের তার ধানজমিতে পড়ে আছে, সে খবর বিদ্যুৎ দফতরের জানা নেই! এ গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছিলেন বলেই শুনলাম। তা ছাড়া, ঝড়-বৃষ্টির পরে বিদ্যুতের খুঁটি বা তারের কোথায় কী অবস্থা, সেটা দেখা তো দফতরেরই দায়িত্ব।’’
অভিযোগ জানাতে হয়রানির কথা অস্বীকার করে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিষ্ণুপুর ডিভিশনাল ম্যানেজার অনিরুদ্ধ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘বিদ্যুতের তার ধানজমিতে পড়ে থাকার বিষয়টি জানা ছিল না। স্থানীয় মানুষ এ বিষয়ে কিছু জানাননি। খবর পেয়েই আমাদের মোবাইল ভ্যানের কর্মীরা ঘটনাস্থলে হাজির হন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
মৃতার স্বামী বসন বাউরি বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ, কাজ করতে পারি না। আমার স্ত্রী দিনমজুরি করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন। ছেলেরা পড়াশোনা করছে। এর পরে কী ভাবে সংসার চলবে জানি না!’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরের ভুলের মাসুল দিতে হল আমার স্ত্রীকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy