Advertisement
E-Paper

বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে নষ্ট বহু সামগ্রী, স্কুলে আতঙ্ক

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে সুভাষপল্লি এলাকায় বৈদ্যুতিক তার পরিবর্তনের কাজ করেছিলেন দফতরের ঠিকা কর্মীরা। সেই সময় বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:০৩
ফাঁকা হয়ে গিয়েছে স্কুল। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা হয়ে গিয়েছে স্কুল। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

কিছুদিন আগেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের এক ঠিকাকর্মীর মৃত্যু হয়। এ বার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হতেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটল সিউড়িতে। আতঙ্ক ছড়াল স্কুলে। পুড়ে নষ্ট হল প্রায় ৬০টি বাড়ির বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম। মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনায় সিউড়ির সুভাষপল্লি এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এলে তাঁদেরকে ঘিরেও অভিযোগ করতে দেখা যায় এলাকাবাসীকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে সুভাষপল্লি এলাকায় বৈদ্যুতিক তার পরিবর্তনের কাজ করেছিলেন দফতরের ঠিকা কর্মীরা। সেই সময় বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ ছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজ শেষ হওয়ার পর বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করতেই ভোল্টেজ অনেকটা বেড়ে যায়। যার জন্য ওই এলাকার প্রায় ৬০টি বাড়িতে কারও টিভি, কারও ফ্রিজ, কারও সিলিং ফ্যান পুড়ে যায়। এরপরেই এলাকার বিদ্যুৎ পরিষেবা সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এক এলাকাবাসীর কথায়, ‘‘বিদ্যুৎ আসা মাত্র ফ্যান এত জোরে ঘুরতে শুরু করল যেন ভেঙে পড়ে যাবে!’’ স্থানীয় বাসিন্দা সুকুমার চৌধুরী, বাপি দাসরা বলেন, ‘‘কাজ করার আগে সব ঠিক ছিল। কাজ শেষ হয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করতেই এই সমস্যা হয়। এত মানুষের যে ক্ষতি হল এই ক্ষতিপূরণ কে দেবে?’’

ওই এলাকারই রবীন্দ্রপল্লি শিক্ষা নিকেতন স্কুলেরও একাধিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি আতঙ্কে স্কুলের পড়ুয়াদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতো এ দিনও সকাল সাড়ে দশটায় স্কুল শুরু হয়। পড়ুয়ারা ক্লাসে বসেছিল। স্কুলের এক শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের আলো জ্বালাতেই শর্ট-সার্কিট হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ওই রুমের একটি বৈদ্যুতিক তার থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। ঘটনায় স্কুলের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পাছে পড়ুয়াদের কোনও দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় সেই কারণে সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন যে স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগে কোনও সমস্যা হয়েছে। কিন্তু পরে তাঁরা জানতে পারেন যে কেবল স্কুল নয়, গোটা এলাকার একই অবস্থা। তাঁরা আরও জানান, স্কুলের মিড-ডে মিলের অর্ধেক রান্নাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে সব কিছু আতঙ্কে বন্ধ করে দিতে হয়। স্কুলের শিক্ষক মদনমোহন গোপ, শিক্ষিকা আঁখি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। স্কুলের দেওয়ালে হাত দিতে পর্যন্ত ভয় করছিল। তাই পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কী হত?’’

কিছুদিন আগেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের এক ঠিকাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তারপরে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দফতরের ভূমিকায়। শহরবাসীর অভিযোগ, কারও প্রাণহানি হয়নি। কিন্তু এত জিনিস তো নষ্ট হয়েছে। এ ব্যাপারে দফতরের নজর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা কৃষ্ণকুমার মিশ্রকে ফোন করা হলে তিনি জানান, ‘‘ভিডিয়ো কনফারেন্সে ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলছি।’’

Power Outage Suri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy