Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শহরে উচ্ছেদে শঙ্কা, হুঁশিয়ারি সংগঠনের

ফুটপাত দখল করে দোকান চালাচ্ছেন তৃণমূলেরই কাউন্সিলর। তা সরাতে গিয়ে পিছু হঠতে হয়েছে খোদ মহকুমাশাসককেই। এই পরিস্থিতে রামপুরহাটের দায়িত্বে থাকা এই দাপুটে আইএস অফিসারের শহরকে ফুটপাত দখলমুক্ত করার সাম্প্রতিক এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দিহান শহরের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের একটা বড় অংশেরই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০১:২০
Share: Save:

ফুটপাত দখল করে দোকান চালাচ্ছেন তৃণমূলেরই কাউন্সিলর। তা সরাতে গিয়ে পিছু হঠতে হয়েছে খোদ মহকুমাশাসককেই। এই পরিস্থিতে রামপুরহাটের দায়িত্বে থাকা এই দাপুটে আইএস অফিসারের শহরকে ফুটপাত দখলমুক্ত করার সাম্প্রতিক এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দিহান শহরের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের একটা বড় অংশেরই।

এই পরিস্থিতিতে দিকে উচ্ছেদ নিয়ে প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছে বিরোধীদের হাতে থাকা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি এক যাত্রায় যাতে পৃথক ফল না হয়, তা সুনিশ্চিত করারও দাবি তুলছে সংগঠনগুলি।

আইএনটিইউসি প্রভাবিত রামপুরহাট ফুটপাত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শাহজাদা হোসেন কিনু বলছেন, ‘‘মহকুমাশাসক ফুটপাত থেকে দখলদার উচ্ছেদের যে কার্যক্রম নিয়েছেন, তাতে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত। এক দিকে, রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে তৃণমূলের উপ পুরপ্রধান পুর্নবাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না বলে জানাচ্ছেন। উল্টো দিকে, এসডিও খাপছাড়া খাপছাড়া করে শহর থেকে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা শুরু করেছেন। অথচ পুরসভা থেকেই ফুটপাত ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।’’

“এই শহরের উন্নয়নের জন্যই ফুটপাত দখলমুক্ত করার প্রয়োজন আছে।
তা কী ভাবে করতে হবে তা নিয়ে এখনও পুরসভার সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তবে, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”
—উমাশঙ্কর এস। মহকুমাশাসক।

অন্য দিকে, সিটু প্রভাবিত ফুটপাত ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল দে বলেন, ‘‘সম্প্রতি ডাকবাংলা মোড় থেকে ছ’ফুকো পর্যন্ত রামপুরহাট–দুমকা রোডের উপর দখলদার সরানো নিয়ে এসডিও যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা ফুটপাত ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কারণ, রামপুরহাটে এখনও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের জন্য কোনও মার্কেট গড়ে ওঠেনি। তবে, আমরা প্রশাসনের গতিবিধির উপর নজর রাখছি। দেখা যাক কী হয়।’’ দুই সংগঠনের নেতাদেরই প্রশ্ন, ফুটপাতে ব্যবসা করা যদি বেআইনি হয়, তা হলে পুরসভা ওই দোকানদারদের ট্রেড লাইসেন্স কেন দিচ্ছে?

ডাকবাংলা মোড় পেরিয়ে রামপুরহা–দুমকা রোডের ধারে রাস্তা থেকে দেড় ফুট দূরেই দোকান আছে শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আব্বাস হোসেনের। ফুটপাত দখল করে সেই দোকান চালানোর প্রশ্নে বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন থেকে ওই দোকান আছে। দোকান সরিয়ে কোথায় যাব! তবে ভাঁড়শালাপাড়া থেকে কামারপট্টি, কামারপট্টি মোড় থেকে পাঁচমাথা, পাঁচমাথা থেকে ঝনঝনিয়া সাঁকো পর্যন্ত সকলে যদি দোকান সরিয়ে নেন, তা হলে আমিও দোকান সরিয়ে নেব।’’ অবশ্য পুলিশ-প্রশাসনের সেই ‘সাহস’ দেখাতে পারবে না বলেই মত শহরবাসীর সংখ্যাগরিষ্ঠের।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রামপুরহাটের উপ-পুরপ্রধান সুকান্ত সরকার দাবি করেন, মহকুমাশাসকের সঙ্গে বেদখল হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির একটি জমি পুনরুদ্ধার নিয়ে আলোচনা চলছে। বাকি জায়গা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ফুটপাত দোকানদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এমনিতেই সরকার ঘোষিত নীতি পুর্নবাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না।’’ অন্য দিকে, মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস জানান, এই শহরের উন্নয়নের জন্যই ফুটপাত দখলমুক্ত করার প্রয়োজন আছে। তা কী ভাবে করতে হবে, তা নিয়ে এখনও পুরসভার সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rampurhat Eradication trinamool tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE