প্রায় তিরিশ বছর আগে ময়ূরেশ্বর থানা এলাকায় শিবগ্রাম থেকে ষাটপলশা পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মিত হয়। রাস্তাটি বর্তমানে জেলা পূর্ত (সড়ক) দফতরের আওতাধীন। অন্যান্য যানবাহন তো বটেই, ওই রাস্তার উপর দিয়েই বিভিন্ন রুটের বাস চালানোরও ছাড়পত্র দিয়েছে পরিবহণ দফতর। অথচ বেশির ভাগ চাষিই আজও পর্যন্ত জমির ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ। এমনকী, পাননি রাস্তার জন্য নেওয়া জমির স্বীকৃতি হিসাবে অধিগ্রহণের নোটিসও।
ওই সব চাষিরা তাই ক্ষতিপূরণের দাবিতে কাল, সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থানীয় রসুনপুর মোড়ে পথ অবরোধের ডাক দিয়েছেন। ব্লক প্রশাসনকে তাঁরা লিখিত ভাবে সে কথা জানিয়েও দিয়েছেন। তার পরেই টনক নড়েছে প্রশাসনের। রফাসূত্র খুঁজতে শুক্রবারই রসুনপুর গ্রামে চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে যান ময়ূরেশ্বর ২ জয়েন্ট বিডিও আরিকুল ইসলাম।
রসুনপুর গ্রামের হরেকৃষ্ণ মণ্ডল, শম্ভুনাথ মণ্ডলদের বক্তব্য, ‘‘আমরা অধিকাংশই প্রান্তিক চাষি। আমাদের এলাকায় জমির বর্তমান বাজার দর কাঠা প্রতি প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। প্রশাসন আমাদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই কেবল ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারও ১০ কাঠা, কারও বা ১ বিঘে জমির উপরে রাস্তা তৈরি করেছে। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সে সময় আমরা কোনও আপত্তি তুলিনি।’’ যদিও ক্ষতিপূরণ দূরের কথা, রাস্তার জন্য জমি নেওয়ার সরকারি স্বীকৃতিপত্র হিসাবে অধিগ্রহণের কোনও নোটিসও তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে ওই চাষিদের দাবি। একই অভিযোগ স্থানীয় ভগবতীপুর গ্রামের প্রভাত দাস, বজরহাট গ্রামের নুর মসলেম শেখদেরও। তাঁদের দাবি, ‘‘তিরিশ বছর ধরে আমরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু প্রশাসন কানেই তোলেনি। তাই বাধ্য হয়ে প্রশাসন যে রাস্তা আমাদের জমির উপর দিয়ে তৈরি করেছে, সেই রাস্তা অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
এ দিকে, আরিকুল ইসলাম জানান, গ্রামবাসীকে পথ অবরোধ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। জমির প্রমাণপত্র-সহ তাঁদের লিখিত ভাবে আবেদন করতে বলা হয়েছে। সেই আবেদন পেলেই তিনি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার আশ্বাস দিয়েছেন। ময়ূরেশ্বরের বর্তমান বিধায়ক অভিজিৎ রায়েরও আশ্বাস, ‘‘চাষিরা লিখিত ভাবে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আমাকে জানালে সরকারের গোচরে আনব।’’