Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

Rainfall: কম বর্ষণে খানিক স্বস্তি চাষিদের

বেলা বাড়তে নামল বৃষ্টি। তাতে খানিক চিন্তায় বাঁকুড়ার চাষিরা। পুরুলিয়ায় অবশ্য এ দিন ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হওয়ায় চাষিরা কিছুটা স্বস্তিতে।

ধান তুলে নেওয়া হচ্ছে পুরুলিয়ার উচালি গ্রামে।

ধান তুলে নেওয়া হচ্ছে পুরুলিয়ার উচালি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৫৩
Share: Save:

সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। বেলা বাড়তে নামল বৃষ্টি। তাতে খানিক চিন্তায় বাঁকুড়ার চাষিরা। পুরুলিয়ায় অবশ্য এ দিন ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হওয়ায় চাষিরা কিছুটা স্বস্তিতে।

বাঁকুড়ার জেলা কৃষি আধিকারিক দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘‘জেলার ১০-১৫ শতাংশ ধান এখনও জমিতে পড়ে রয়েছে। যদি বৃষ্টি কমে যায়, তাহলে ক্ষতি কম হবে। আনাজের জমিতেও জল জমতে দেওয়া চলবে না।’’ পুরুলিয়ার উপ-কৃষি আধিকারিক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘জেলায় ১৩টি জায়গায় বৃষ্টিপাত পরিমাপক কেন্দ্র আছে। সব কেন্দ্রকেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বৃষ্টিপাত হয়েছে, এই মর্মে কোনও কেন্দ্র থেকে রিপোর্ট আসেনি।’’

কৃষি দফতরের তরফে ধান কেটে সুরক্ষিত জায়গায় তুলে রাখা বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার কথা প্রচার করা হয়েছিল। তবু মাঠে কাদা থাকায় অনেকেই মাঠে ধান ফেলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান। বাঁকুড়ার সোনামুখী ডিহিপাড়ার পবিত্র মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘জমির সব ধান তুলে আনা যায়নি। জমিতে কাদা থাকায় গাড়ি ঢোকেনি। বেশি বৃষ্টি হলে অনেক ক্ষতি হবে।’’ রানিবাঁধের বীরখাম গ্রামের ফাল্গুনী হালদার জানান, মাঠে কেটে রাখা ধান ভিজে গিয়েছে। সোনামুখীর তেলরুই গ্রামের আলু চাষি নিত্যানন্দ দেবনাথ, বিষ্ণুপুর বাঁকাদহের ইননাদ খানেরা বলেন, ‘‘জলদি আলুর জন্য এই বৃষ্টি ভাল। কিন্তু অন্য আলুর জমি তৈরি পিছিয়ে যাবে। ফলন পেতে দেরি হবে।’’ ইঁদপুরের হিরাশোলের গৌতম তন্তুবায়, খাতড়ার জলহরি গ্রামে ফটিক মাহাতোরা জানান, সর্ষে ও আলুর জমিতে নালা করে দেওয়া হয়েছে, যাতে জল না জমে।

পুরুলিয়ার চাষিদের দাবি, জেলায় এ বছর ভাল বৃষ্টি হওয়ায় গত বারের চেয়ে আমন ধানের ফলন বেশি হয়েছিল। কিন্তু এখন ভারী বৃষ্টি হলে জমিতে কেটে রাখা ধানের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কায় পড়েন তাঁরা। কৃষি দফতরের দাবি, নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ ধান কেটে ঘরে তুলে ফেলছিলেন চাষিরা। ডিসেম্বরের গোড়ায় বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় দ্রুত ধান ঘরে তুলতে প্রচার চালানো হয়। উপ-কৃষি আধিকারিক বলেন, ‘‘তার ফলে প্রায় ৮০ শতাংশ জমির ধানই বাড়িতে তুলে ফেলেছিলেন চাষিরা। কয়েকটি ব্লকে তা ৯০ শতাংশ।’’

রঘুনাথপুরের রক্ষতপুর গ্রামের উৎপল মাজির কথায়, ‘‘বৃষ্টির পূর্বাভাসে চিন্তায় পড়েছিলাম। শেষ অবধি অবশ্য তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় বড় ক্ষতি হয়নি।’’ আড়শার উচিলা গ্রামের শিলাবতী মাহাতো জানান, গ্রামের মহিলাদের কাজে লাগিয়ে ধান তোলার কাজ হয়। তার পরেও কিছু ধান মাঠে পড়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টি হলে ধানের ক্ষতি হত।’’ ঝালদার খাটজুড়ি গ্রামের নির্মল কুইরিও বলেন, ‘‘বাড়তি মজুর লাগিয়ে বেশিরভাগ ধানই বাড়িতে তুলে ফেলেছি। বৃষ্টি তেমন না হলেও, খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য মজুর কমাচ্ছি না। দ্রুত সমস্ত ধান বাড়িতে তুলে ফেলব।’’ দিনভর আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। এই আবহাওয়ায় আনাজ চাষিদের জমিতে ছত্রাকনাশক দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি দফতর।

এ দিন বাঁকুড়া শহরের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। বাঁকুড়ার বাসিন্দা অরূপ দে, বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা কার্তিক সরকারেরা বলেন, ‘‘রবিবার সপ্তাহের অনেক কাজ সেরে রাখি। কিন্তু আবহাওয়ার জন্য কিছু করা গেল না।’’ বিষ্ণুপুরের আনাজ ব্যাবসায়ী কৃষ্ণ গরাই বলেন, ‘‘বিক্রি তেমন হল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE