মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার। তার পরদিনই, শনিবার প্রকাশিত হল মাদ্রাসা বোর্ডের হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিলের ফলাফল। বীরভূমে এমনিতে আলিম-ফাজিলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কম। তবে তার মধ্যেও যথেষ্ট ভাল ফল করেছে জেলার বিভিন্ন হাই মাদ্রাসা।
হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল এই তিন স্তরেই জেলায় মেয়েদের সাফল্য বেশি। জানা গিয়েছে, মেধা তালিকায় স্থান না পেলেও জেলার দু’টি হাই মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী, একজন ছাত্রী ও এক ছাত্র যুগ্ম ভাবে ৭১৪ নম্বর পেয়ে সম্ভাব্য প্রথম হয়েছে। তাদের একজন মোসাম্মাৎ ফাইজুন্নিসা খাতুন।
ইলামবাজার ব্লকের পাড়ুই থানার অন্তর্গত খুষ্টিগিরি দরগা শরিফ হাই মাদ্রাসার ছাত্রী সে। অন্য জন সালমান জামান। সে নলহাটি ১ ব্লকের আমাইপুর মিলনী হাই মাদ্রাসার ছাত্র। দুই পড়ুয়ার নজরকাড়া ফলে খুশি তাদের পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ফাইজুন্নিসার বাড়ি ইলামবাজার ব্লকের মঙ্গলডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাপবাগ গ্রামে। মা মোসাম্মাৎ হাবিবুন্নিসা বিবি গহবধূ। বাবা শেখ ফজলুল হক, কৃষিজীবী। দু’ভাই বোনের মধ্যে ফাইজুন্নিসাই কনিষ্ঠ। ফাইজুন্নিসার কথায়, পরিশ্রমের ফল পেয়েছে সে। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় কৃতী ছাত্রী। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শেখ মুকুল বলেন, “ফাইজুন্নিসা মেধাবী ছাত্রী, ওর সাফল্যে আমরা গর্বিত। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাবরই ভাল ফল করে।”
আমাইপুর হাই মাদ্রাসার ছাত্র সালমান জামানের বাড়ি নলহাটি থানার মধুরা বাগানপাড়ায়। বাবা মহম্মদ কামরেজ্জামান গ্রামীণ চিকিৎসক, মা গৃহবধূ। সালমানও ডাক্তারি পড়তে চায়। পড়ার পাশাপাশি ভলিবল খেলতে ভালবাসে সে। তার হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামও জানিয়েছেন ছাত্রের ফলে গর্বিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাল ফল হয়েছে।
এদিন সকালে সিউড়ি হামিদিয়া হাই মাদ্রাসা থেকে মার্কশিট বিলি করা হয়। তখনই সার্বিক ফল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গিয়েছে। ডিএসএসই বোর্ড সদস্য ইসমাইল হক বলেন, “এবারের ফল বেশ ভাল। দুই পড়ুয়ার সর্বোচ্চ নম্বর এক হওয়ার পাশাপাশি তাদের দু’টি মাদ্রাসায় ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থীই সফল।”
খুষ্টিগিরির ৭৭ জন ও আমাইপুরের ৯৯ জন পরীক্ষার্থীই কৃতকার্য। খুষ্টিগিরির ৭৭ জনের মধ্যে ১০ জন প্রথম শ্রেণি বিভাগে উত্তীর্ণ, আমাইপুরে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৭০ জন ছাত্রী ছিল।
জেলায় এবারে আলিম পরীক্ষা দিয়েছিল ২৪০ জন, ফাজিল পরীক্ষা দিয়েছেন ১৫৮ জন। দু’টি পরীক্ষার উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা একসঙ্গে মিশে থাকায় পৃথক ভাবে আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় কত জন পাশ করেছে তা এখনও জানা যায়নি।
হাই মাদ্রাসা পরীক্ষার ফলাফলে মেয়েদের সাফল্যের হার বেশি। পাইকর হাই মাদ্রাসা স্কুলে ছাত্রী হাবিবা সুলতানা ৬১০ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে। পরীক্ষায় মেয়েদের সাফল্যে জেলা মাদ্রাসা তৃণমূল শিক্ষাসেলের জেলা সভাপতি ফজলে মঊলা খান বলেন, “মেয়েদের শিক্ষার অগ্রগতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী প্রকল্প-সহ সংখ্যালঘু মেয়েদের পড়াশোনার অগ্রগতির জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধায় মেয়েরা পড়াশোনায় এগিয়ে আসছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)