প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা সমাজসেবী ভাবিনী মাহাতোর আবক্ষ মূর্তি বসানো হল মানবাজারের মাঝিহিড়া গ্রামে। মঙ্গলবার ওই উপলক্ষে অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদান, সাহসিকতা ও সমাজসেবার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়। ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারের অনেকেই।
১২ বছর বয়স হয়ে গেলেও মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়নি কেন, যে সময়ে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হত সেই সময়ে মানবাজারের মাঝিহিড়া গ্রামের ভাবিনী দেশের কাজে পথে নেমেছিলেন। ১৬ বছর বয়সে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রথমবার জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। জেলার ইতিহাস গবেষক প্রদীপ মণ্ডল জানান, সেই সময় কংগ্রেস নেতা জগবন্ধু ভট্টাচার্য ভাবিনীদেবীকে ঝাড়খন্ডের চাষ থানার সোতনপুর গ্রামে মহিলাদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের কাজে লাগতে বলেন। তখন চাষ থানা অখন্ড মানভূম জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরে তিনি ওখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হয়েছিলেন।
এমনই টুকরো টুকরো নানা স্মৃতি উঠে এল এ দিনের স্মৃতিচারণে। প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্মী দীপেন্দ্রনারায়ণ মাহাতো বলেন, ‘‘ভাবিনীদেবী আমার দিদিমা ছিলেন। ১৯১৫ সালে মাঝিহিড়া গ্রামে তার জন্ম। ২৪ জুন ২০১৪ সালে ওঙ্কারপীঠে দেহ রাখেন।’’ বক্তাদের স্মৃতিচারণে উঠে আসে স্বাধীনতা আন্দোলনে মানভূমের নারীদের ভূমিকার কথাও। স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে মাঝিহিড়া আশ্রমেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাস চর্চা করতে গিয়ে মানবাজারের বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারাণি টুডু বলেন, ‘‘প্রতিকূল সমাজ ব্যবস্থার মধ্যেও ভাবিনীদেবীর মতো নারীরা স্বাধীনতা আন্দোলনের লড়াইয়ে যোগ দিয়েছিলেন। এটা কম কথা নয়। এমনই বহু আত্মত্যাগে দেশ স্বাধীন হয়েছে।’’
ওঙ্কারপীঠের সদস্য শচীবালাদেবী, দুলালী মাহাতোরা জানান, পাঁচ দশক আগে ভাবিনীদেবী ওঙ্কারপীঠ স্থাপন করেন। তিনি মনে করতেন, যে কোনও কাজে মানসিক শান্তিই আসল কথা। সে কথা স্মরণে রেখে আজও সেই চর্চাই চলছে ওঙ্কারপীঠে। —নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy