Advertisement
E-Paper

রেশনের আটা পাচার, আটক

পুলিশ জানিয়েছে, লরিটিতে থেকে মোট ৯৬ বস্তা আটা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রতিটি বস্তায় ৭৫০ গ্রাম ওজনের কমবেশি ৬০টি করে আটার প্যাকেট থাকার কথা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০

পাচার করার সময় রেশনের আটার প্যাকেট বোঝাই একটি লরি আটক করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার বিকেলে পুরুলিয়া সদর থানার কর্পূরবাগান এলাকার একটি চালকলের গেটের কাছ থেকে আটা বোঝাই এই লরিটিকে ধরা হয়। পুলিশের দাবি, এতে রেশনের খাবার পাচারের চক্রের হদিস মিলতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, লরিটিতে থেকে মোট ৯৬ বস্তা আটা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রতিটি বস্তায় ৭৫০ গ্রাম ওজনের কমবেশি ৬০টি করে আটার প্যাকেট থাকার কথা। আটা যে রেশনে বিলির জন্য তৈরি করা হয়েছে, তা বস্তার গায়ে উল্লেখ করা রয়েছে। আটা আটক করা গেলেও দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকদের দেখে সেখান থেকে গাড়ির লোকজন সরে পড়ে। তাই কাউকে ধরা করা যায়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্নীতি দমন শাখার কাছে বেশ কিছু দিন ধরেই খবর ছিল, পুরুলিয়া শহরের এই এলাকায় রেশনের খাদ্যপণ্যের একটি পাচারচক্র সক্রিয় রয়েছে। সেই খবর পেয়ে দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকেরা এলাকায় জাল পাতেন। বুধবার দুপুরে তাঁদের কাছে খবর আসে, ওই এলাকার একটি চালকলের গেটের কাছে রেশনে বিলির জন্য বরাদ্দ করা আটা পাচারের জন্য লরিতে বোঝাই করা হয়েছে।

খবর পেয়েই আধিকারিকেরা সেখানে হানা দেন। বেগতিক দেখে লরি ফেলে চালক, খালাসি সরে পড়ে। দুর্নীতি দমন শাখার দাবি, ওই চালকলের মালিক ও লরির মালিক একই ব্যক্তি। তাঁর নামে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

তবে এই জেলায় রেশনের আটা যে পাচার হচ্ছে, তা নিয়ে আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, রেশনে বিলির পরে সেই আটা ঘুরপথে আটাকলের মালিকের কাছে চলে আসছে। এমনিতে মিল মালিক সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি পাচ্ছেন। তারপরে কম দামে সেই আটা কিনে বাজারে বেশি দামে তিনি বিক্রি করছেন। এতে কার্যত একই আটায় তিনি দ্বিগুন লাভ করছেন। এ নিয়ে তিনি জেলা প্রশাসন ও খাদ্য দফতরের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন।

এ দিন নেপালবাবু বলেন, ‘‘গত জুলাইয়ে পুরুলিয়া শহরের রাস্তা থেকে ঠিক এ রকমই রেশেনের আটার প্যাকেট বোঝাই একটি লরি দুর্নীতি দমন শাখা আটক করেছিল। তারপর একই ভাবে পুরুলিয়া শহর থেকে রেশনে গ্রাহকদের বিলির জন্য প্যাকেট বোঝাই একটি লরি ফের আটক করল পুলিশ। আমরা যে অভিযোগ তুলেছি, এতে তো তারই সত্যতা প্রমাণিত হল। প্রশাসনকে দু’টি ঘটনারই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে পাচার চক্রের চাঁইদের গ্রেফতার করা উচিত।’’ তিনি জানান, এই আটা কোথা থেকে বের হয়েছিল, কোন পরিবেশকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল, কেনই বা ঠিক জায়গায় না গিয়ে এ ভাবে নথি ছাড়া এত আটা পুলিশের হাতে ধরা পড়ল, তা দেখা দরকার। এই পাচার চক্রের নেপথ্যে কারা রয়েছে, সমস্ত কিছুই প্রশাসনের তদন্ত করে বের করার দাবি তুলেছেন তিনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, আটার প্রস্তুতকারক সংস্থাটি পুরুলিয়া শহরেরই। আটা প্রস্তুতকারক সংস্থার পক্ষে সন্তোষ কাটারুকা বলেন, ‘‘এই আটার প্যাকেট কোথায় যাচ্ছিল বা কোথা থেকে বের হয়েছে, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ জেলা খাদ্য দফতরও জানিয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্ত হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আটার প্যাকেটগুলি আপাতত পুরুলিয়া শহরের এক পরিবেশকের কাছে জমা রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরিবেশক দেবকুমার দাঁ বলেন, ‘‘পুলিশ আপাতত বাজেয়াপ্ত করা ওই আটার প্যাকেটগুলি আমাদের কাছে রেখেছে। এই আটা কী করা হবে, তা পুলিশ ঠিক করবে।’’ জেলার চালকল মালিকদের সংস্থার মুখপাত্র মনোজ ফোগলা বলেন, ‘‘ওই চালকলটি চলছিল না। আমাদের সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগও নেই। অন্য কেউ বন্দোবস্ত নিয়ে চালাচ্ছিল বলে জানি।’’

Flour Trafficking Ration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy