শপথের পরে শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়।
রোদের তেজকে উপেক্ষা করে পুরসভা চত্বর তখন জনসমুদ্র। কখনও জনতার সেই সমুদ্র উথলে উঠল জয় উল্লাসে, তো কখনও জয়ধ্বনির সঙ্গে পুষ্প বৃষ্টি করল ড্রোন (চালক-হীন উড়ুক্কু যান)।
সোমবার এক টানা ছ-বারের জন্য বিষ্ণুপুর পুরপ্রশাসনের দায়িত্ব নিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়। সেই ১৯৯০ সাল থেকে দুজনের পুরপ্রধান ও উপ পুরপ্রধান হিসেবে পথচলা শুরু।
পুরভবনের সামনে মিউজিক কলেজের গায়ে গা লাগিয়ে এ দিন বাঁধা হয়েছিল বিশাল অনুষ্ঠান মঞ্চ। ভিতরে পুরসভার সভাগৃহে সকাল এগারোটা নাগাদ পুরপ্রধান-উপ পুরপ্রধান সহ দলীয় কাউন্সিলরদের শপথ শুরু হয়। শপথবাক্য পাঠ করান বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত। দুপুর বারোটা নাগাদ শপথ গ্রহণ শেষ হতেই জনগণের ঢেউয়ের দোলায় ভাসতে ভাসতে মঞ্চে ওঠেন শহরের দুই পুর-কর্তা। শ্যামবাবু এলাকার বিধায়ক এবং রাজ্য মন্ত্রীসভার সদস্যও।
দুই শীর্ষ নাগরিক মঞ্চে উঠতেই ৬টি বাজির শব্দ শোনা যায়। শ্যামবাবু মঞ্চে ডেকে নেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, কোতুলপুর ও বড়জোড়ার বিধায়ক যথাক্রমে শ্যামল সাঁতরা ও আশুতোষ মুখোপাধ্যায় এবং সোনামুখীর ভাবী পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়কে। সেইসঙ্গে দলের জয়ী কাউন্সিলর ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তৃণমূলের ব্লক ও জেলা নেতাদেরও ডেকে নেন তিনি।
অনুষ্ঠান শুরু হতেই মাথার উপর উড়তে থাকে ড্রোন। মঞ্চে উপবিষ্টদের নেতৃত্বের মাথায় শুরু হয় পুষ্পবৃষ্টি। শ্যামবাবু সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আজ কদম কদম বাড়ায়ে যাওয়ার দিন। আর সেটা চলতে চাই আপনাদের সকলকে নিয়েই। আপনারা আবার সে সুযোগ দিয়েছেন। দলনেত্রীর নির্দেশও তাই। বিষ্ণুপুরকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। শহরকে যানজট মুক্ত করতে একটি দীর্ঘ উড়ালপুলের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। কাজ শুরু করেছি এই শহরের বিখ্যাত হস্তশিল্পগুলির পুনরুজ্জীবন নিয়েও।” শ্যামবাবুর বক্তৃতা শেষ হওয়ার আগেই নব নির্বাচিত পুরপ্রধান ও উপ পুরপ্রধানকে মঞ্চে উঠে সংবর্ধনা দেবার জন্য শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। সভা শেষে শহীদ বেদীতে এসে মালা দেন দুই পুরকর্তা। পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছতে না পারায় এবার বিজেপির নির্বাচিত দুই কাউন্সিলর অনুষ্ঠানে শপথ নিতে পারেননি। তবে এ দিন তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গেই শপথ নিয়েছেন দলের টিকিট না পেয়ে জেতা নির্দল কাউন্সিলর রাজীবকান্তি রায় (বাপ্পা)”।
ড্রোন থেকে পুষ্পবৃষ্টি।
রাজীবকান্তি বলেন, “দলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী আমাকে দলে ফেরার জন্য আবেদন করতে বলেছেন। আমি আবেদন করে তাড়াতাড়ি দলে যোগ দেব।” বিজেপির দুই কাউন্সিলর অনুষ্ঠানে শপথ না নিলেও তাঁরা এ দিন পরে শপথ নিয়েছেন বলে জানান বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, “দেরি হওয়ায় আমাদের দুই কাউন্সিলর, এ দিন অনুষ্ঠানে শপথ নিতে পারেননি। তাঁরা পরে শপথ নিয়েছেন। তবে ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী দেবপ্রিয় বিশ্বাসকে আমরা পুরসভার নেতা নির্বাচিত করেছি। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আমরা সরব হব।”
ছবি: শুভ্র মিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy