দলমা পাহাড় থেকে সমতলে হাতি নেমে আসা নতুন কোনও ঘটনা নয়। ফসলের তছনছ বা বাড়ি ভাঙচুর তো লেগেই থাকে। কিন্তু হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যেত, যদি সাধারণ মানুষ একটু সচেতন হতেন। বন দফতরের কর্তাদের দাবি, অতি কৌতুহলী মানুষজন হাতির দলের খুব কাছাকাছি চলে যাওয়ায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বর্ধমানের মেমারি-মন্তেশ্বরে হাতি দেখতে খুব কাছাকাছি চলে যাওয়ায় এ ভাবেই মৃত্যু হয় চার জনের।
কিন্তু তাতেও হুশ ফেরেনি। রবিবার রাতে ফের বিষ্ণুপুর-মেদিনীপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বাঁকাদহ গ্রামের কাছে হাতি তাড়ানো দেখতে গিয়ে গুরুতর জখম হলেন আজিজুর খান নামে এক ব্যক্তি। তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের ডিএফও অয়ন ঘোষ সোমবার জানান, হাতি দেখার অতিরিক্ত কৌতুহলের ফলেই দলটির সামনে পড়ে যান ওই ব্যক্তি।
একই ঘটনা বার বার ঘটে চলায় চিন্তা বেড়েছে বন দফতরের কর্তাদের। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত প্রায় দু’ দশক ধরে ঘন ঘন ঝাড়খণ্ডের দলমা পাহাড় থেকে বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেত বন বিভাগের জঙ্গলে নেমে আসছে বুনো হাতির দল। ওড়িশার ময়ূরঝর্ণা থেকেও সম্প্রতি আরো একটি হাতির দল আনাগোনা করছে। ডিএফও বলেন, ‘‘আগে হাতির দল খুব বেশি দিন বিষ্ণুপুরের জঙ্গলে থাকত না। কিন্তু গত ১৩ মাসে প্রায় ২১৫ দিন বিষ্ণুপুরে থেকেছে হাতির দল। সহজে দলমা বা ময়ূরঝর্ণায় ফিরতে চাইছে না। তাড়িয়ে দিলেও অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু এলাকা ঘুরে এখানেই ফিরে আসছে।’’
হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় ফসলের ক্ষতি এবং প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। অয়নবাবুর বলেন, ‘‘মাইকে ঘন ঘন প্রচার করেও বিপদ এড়ানো যাচ্ছে না। ঝোঁকের মাথায় বড়সড় বিপদ ডেকে আনছেন অনেকেই। হাতি দেখার ভিড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন বন দফতর এবং পুলিশকর্মীরা। বিপদের গুরুত্ব কিছুতেই বুঝছে না মানুষ। এ বার তো দেখছি ১৪৪ ধারা জারি করা ছাড়া আর কোনও উপায় খোলা থাকছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy