Advertisement
E-Paper

আগুন রুখতে নয়া চার দমকল কেন্দ্র

দমকল কেন্দ্রগুলি থেকে দূরের কোনও এলাকায় আগুন লাগলে, পরিষেবা নিয়ে তৈরি হয় ক্ষোভ। বিশেষ করে শীতের শেষ থেকে বর্ষার শুরু পর্যন্ত। এই সময়েই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে প্রচুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০০:৪৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

গোটা জেলায় দমকল কেন্দ্র মাত্র তিনটি। জেলা সদর সিউড়ি, রামপুরহাট ও বোলপুরে।

দমকল কেন্দ্রগুলি থেকে দূরের কোনও এলাকায় আগুন লাগলে, পরিষেবা নিয়ে তৈরি হয় ক্ষোভ। বিশেষ করে শীতের শেষ থেকে বর্ষার শুরু পর্যন্ত। এই সময়েই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে প্রচুর। খোথাও আগুন লাগলে নিকটবর্তী দমকল কেন্দ্র থেকে ইঞ্জিন আসার অপেক্ষায় থাকেন এলাকাবাসী। কখনও দমকল পৌঁছনোর আগেই পুড়ে যায় সব কিছু। আসতে ‘দেরি’ হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা লোকজনের হাতে অনেক সময়ই নিগৃহীত হতে হয় দমকলকর্মীদের।

বছরখানেকের মধ্যেই সেই ছবি অনেকটা বদলাতে চলেছে, দমকল বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, নলহাটির মতো জেলার অন্য তিনটি পুর-শহর এবং মুরারইয়ে তৈরি হবে নতুন দমকল কেন্দ্র।

বীরভূমে দমকলের বিভাগীয় অধিকর্তা নিতাই চট্টোপাধ্যায় জানান, উপযুক্ত জমি পেয়ে সাঁইথিয়ায় দমকল কেন্দ্র গড়ার কাজ চলছে পুরোদমে। ভবনের প্রথম তলের কাজ শেষ। আগামী অর্থবর্ষেই দমকল কেন্দ্র গড়ার কাজ শুরু হবে দুবরাজপুরে। নলহাটি ও মুরারইয়েও ওই কেন্দ্র তৈরির জায়গা দেখা হয়েছে। নলহাটিতে ইতিমধ্যেই জমি হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে দমকল দফতরের নামে।

সিউড়ির দমকলের উপর নির্ভরশীল সাঁইথিয়া ও ময়ূরেশ্বরের (২) বিস্তীর্ণ অঞ্চল-সহ ময়ূরেশ্বর (১), মহম্মদবাজার ও লাভপুরের একাংশ। যেগুলির দূরত্ব কোথাও ২০ তো কোথাও ৫০ কিলোমিটার। কোনও কোনও এলাকার দূরত্ব তারও বেশি। ওই সব জায়গায় আগুন লাগলে সিউড়ি থেকে দমকল আসতে আসতেই অনেক সময় সব কিছু পুড়ে যায়। দুবরাজপুর ও খয়রাশোলে বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে সিউড়ি থেকে দমকলের ইঞ্জিন যেতে না যেতেই কখনও কখনও সব শেষ। সিউড়ি থেকে দুবরাজপুর বা খয়রাশোলের নানা অংশের দূরত্ব কোথাও ২৫ তো কোথাও ৭৫ কিলোমিটার।

অেক দিন ধরেই সাঁইথিয়া ও দুবরাজপুর— ওই দু’টি পুর এলাকায় দমকল কেন্দ্র গড়ার দাবি ছিল। একই কারণে অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় উন্নততর পরিকাঠামো গড়ে তুলতে রামপুরহাট মহকুমার নলহাটি ও মুরারইয়েও দমকল কেন্দ্র গড়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

সেই দাবি মেনে সাঁইথিয়ার মুরাডিহি মৌজায় তৈরি হচ্ছে নতুন দমকল কেন্দ্র। দুবরাজপুর শহরে দমকলের জন্য জায়গা ঠিক হয়েছে বামফ্রণ্ট সরকারের আমলে তৈরি হওয়া নতুন বাসস্ট্যান্ড নামে পরিচিত এলাকা। ভবিষ্যতে ঠিক ওই রাস্তার পাশ দিয়েই যাবে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ জাতীয় সড়কের বাইপাস।

দমকলকর্তাদের কথায়, ‘‘দুবরাজপুরে জায়গা আমাদের দফতরের হাতে আসার পর কেন্দ্র গড়তে পূর্ত দফতরকে দিয়ে তৈরি করা ‘প্ল্যান এস্টিমেট’ নবান্নে জমা পড়েছে। আশা করা যায়, আগামী অর্থবর্ষের এপ্রিল–মে মাসেই কাজ শুরু হবে। নতুন দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ১ বছর।’’

দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ফায়ার স্টেশনের জন্য প্রস্তাবিত ব্যয় কমবেশি ২ কোটি টাকা। প্রতিটি নতুন ফায়ার স্টেশন হবে ২ পাম্প ফায়ার স্টেশন। কেমন হবে নতুন দমকল কেন্দ্রের পরিকাঠামো? দমকলের বিভাগীয় অধিকর্তা নিতাই চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২ পাম্প ফায়ার স্টেশন বলতে বোঝায় যেখানে দু’টি করে মোট চারটি দমকলের ইঞ্জিন থাকতে পারে।’’ তিনি জানান, প্রতিটি দমকল কেন্দ্রে থাকবেন ৪ জন আধিকারিক, ৯ জন লিডার, ৯ জন ফায়ার ইঞ্জিন অপারেটর কাম ড্রাইভার। ফায়ার অপারেটর থাকবেন ৩৬ জন।

তবে প্রশ্ন উঠছে, সিউড়ি, বোলপুর ও রামপুরহাটে ৩ পাম্প ফায়ার স্টেশন রয়েছে। কিন্তু কোথাও পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী নেই। অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা-সহ ‘স্পেশ্যাল জব’ (উদ্ধারকাজ) করতে হয় দমকলকর্মীদের। সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যেই কাজ চালাচ্ছে দমকল বিভাগ। এত গুলি নতুন কেন্দ্র তৈরির পর সেখানেও কি সঠিক সংখ্যক কর্মী থাকবেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক দমকলকর্তার কথায়, ‘‘সরকার যখন অনুমোদন দিয়েছে, ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে।’’

Fire Station Fire Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy