Advertisement
১৮ মে ২০২৪
তারাপীঠে নাবালিকা হত্যা-কাণ্ড

জেঠার বাড়িতে মিলল রক্তের দাগ

নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় কিছু সূত্র পেল তদন্তকারী দল। বুধবার সকালে তদন্তে গিয়ে নির্যাতিতা নাবালিকার বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে থাকা জেঠার বাড়ির দাওয়ার একাংশে কয়েক ফোঁটা রক্তের দাগ খুঁজে পেল সিআইডি এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল।

এখানেই মিলেছে রক্তের ফোঁটা। বুধবারের নিজস্ব চিত্র।

এখানেই মিলেছে রক্তের ফোঁটা। বুধবারের নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তারাপীঠ শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০১:৩২
Share: Save:

নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় কিছু সূত্র পেল তদন্তকারী দল। বুধবার সকালে তদন্তে গিয়ে নির্যাতিতা নাবালিকার বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে থাকা জেঠার বাড়ির দাওয়ার একাংশে কয়েক ফোঁটা রক্তের দাগ খুঁজে পেল সিআইডি এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল। পরীক্ষার জন্য সেই রক্তের দাগের নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। পাশাপাশি যে অংশে রক্তের দাগ মিলেছে, তা চক চিহ্নিত করে ঘিরে দিয়েছে তদন্তকারী দল। একই ভাবে চক দিয়ে ঘেরা হয়েছে নাবালিকার বাড়ির বাইরের দরজার একাংশও।

গোটা ঘটনায় তদন্তকারী দল যদিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও তাঁর বাড়ির একাংশে রক্তের দাগ মেলায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা মেয়েটির জেঠামশাই। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এই ক’দিনে এত লোক ওই জায়গায় এসে বসেছিল। ঘোরাঘুরি করেছে। কারও তো নজরে পড়েনি। তবে, ওঁদের কাজ ওঁরা করছেন। দেখা যাক কী হয়।” এই ঘটনায় প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও পড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে নির্যাতিতার আর এক জেঠা এবং যুবককে। তাঁরাই প্রথম মাঠের ধারে একটি খড়ের অস্থায়ী ছাউনিতে মেয়েটির দেহ পড়ে থাকতে দেখেছিলেন।

এ দিকে, ঘটনার পর থেকেই এক যুবক গ্রাম ছেড়েছেন বলে দাবি নির্যাতিতার পরিবারের। মেয়ের খুনে তাঁর কোনও ভূমিকা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহতের মা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা খবর পেয়েছি, ঘটনার রাতে ওই যুবক কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে মদ্যপান করছিল। ওই যুবক ঘটনার পর থেকে কেন গ্রামছাড়া, তা খুবই রহস্যজনক। পুলিশও নাকি ওকে খুঁজে পাচ্ছে না। ওর বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই পুলিশ ওই যুবকের সন্ধান পেতে পারে।’’ পুলিশ ওই যুবককে খুঁজে বের করতে পারলেই মেয়ের খুনের ব্যাপারে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে তাঁর দাবি। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি-র কাছেও তিনি ওই দাবি জানিয়েছেন। এ দিন বিকালে বাড়িতে গিয়েও অবশ্য ওই যুবকের দেখা মেলেনি। তাঁর মা এবং প্রতিবন্ধী বাবা বলেন, ‘‘আমরা দু’জন তারাপীঠে ভিক্ষা করে খাই। ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। ছেলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে বর্তমানে বুধিগ্রামের কাছে নয়াগ্রামে থাকে। ও সেখানে আছে কিনা জানি না।’’

অন্য দিকে, এ দিনই বিকালে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিল বিজেপি-র একটি প্রতিনিধিদল। তাতে ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সরকার, জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল কর্মকার, জেলা সম্পাদক রামকৃষ্ণ রায় প্রমুখ। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘সাত দিন হতে চলল এখনও খুনের কোনও কিনারা হল না। স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েটির পরিবার পুলিশের উপর ভরসা করতে পারছে না। আমরা ঘটনাটি কেন্দ্র সরকারের নজরে আনব। দরকারে উচ্চ আদালতেও যাব।’’ ঘটনায় রাজ্য পুলিশের উপরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাবালিকার মা-ও। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ কুকুর, সিআইডি, ফরেন্সিক তদন্ত অনেক হল। আমার অতটুকু ফুলের মতো মেয়ের খুনিরা কেউ ধরা পড়ল না। আমি তাই সিবিআই তদন্ত চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tarapith
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE