সরকারের লক্ষ্য, এলাকার মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া। সেই লক্ষ্য নিয়েই গ্রামের মহিলাদের হাত ধরে কেউ বলে গেলেন, ‘‘চিন্তা করবেন না আমরা আপনাদের পাশে আছি।’’ কেউ আবার রাস্তার পাশে থাকা নলবাহিত কল থেকে গ্রীষ্মেও জল মেলে কি না, খোঁজ নিলেন। সেই জল খেলেন এবং চোখেমুখে ছিটেও দিলেন।
শুক্রবার ঠিক এই ভাবেই মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি এলাকার চাঁদা মৌজার মথুরাপাহাড়ি গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব ছোটেন ডি লামা, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সচিব সুরেন্দ্র গুপ্ত এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএলের এমডি পি বি সালিম।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক বাধা সামলে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখার বার্তা দিয়ে সবে খনি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজে হাত পড়েছে চাঁদা মৌজায়। সেই কাজের আগ্রগতি কেমন, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি প্রকল্প এলাকার মানুষের স্বার্থ ও অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকার বার্তা নিয়ে, তাঁদের কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা জানতেই মূলত এ দিনের সফর রাজ্য প্রশাসনের তিন শীর্ষ আধিকারিকের। সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ, রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম, দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ ও ভূমি অধিগ্রহণ) নীতু শুক্ল ও বাবুলাল মাহাতো।
খনি এলাকায় পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা, স্থানীয়দের জমির নথি ঠিক করে দেওয়া, জাতিগত শাংসাপত্র দেওয়া, পাট্টা বিলি, রেশন কার্ড বা আধার সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে শিবির করা—এমন নানা পদক্ষেপ করে চলেছে প্রশাসন। এ দিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দুই সচিব এবং এমডি সোজা চলে আসেন মথুরাপাহাড়ি গ্রামে। গ্রামের মোড়ল বা মাঝি হারাম চন্দ্র টুডুর সঙ্গে দেখা করেন। ওই গ্রামে চলতে থাকা শিবির থেকে বেশ কয়েক জনকে জমির পরচা বিলি করা হয়।
এলাকার বেশ কিছু মহিলা অনুযোগ করেন, তাঁদের আধার কার্ডে সমস্যা রয়েছে। বংশ তালিকা নেই বলে জাতিগত শংসাপত্র পেতেও সমস্যা হচ্ছে। এর ফলে সরকারি ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় তাঁরা আসতে পারছেন না। পাট্টা পেতে ও রেশন কার্ডে সমস্যার কথা জানান কেউ কেউ। পঞ্চায়েত সচিব ছোটেন ডি লামা বলেন, ‘‘চিন্তা করবেন না। সব হয়ে যাবে। আমরা আছি।’’ গ্রাম থেকে ফেরার পথে এক কিশোরীকে রাস্তার ধারে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জলের কল থেকে জল ভরতে দেখে নেমে আসেন সুরেন্দ্র গুপ্ত এবং পি বি সালিম। প্রশ্ন করেন, সারা বছর জল পায় কি না। তার পরে চোখে-মুখে জল দেন তাঁরা। আঁজলা ভরে সেই জল খান। পরিদর্শন শেষে সচিবেরা খনির কাজ নিয়ে মহম্মদবাজার ব্লক অফিসে বৈঠক করেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)