Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
CV Ananda Bose

জেলার আবেগ ছুঁলেন রাজ্যপাল

এ দিন সমাবর্তন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল মানভূমের স্বাধীনতা সংগ্রামী অতুলচন্দ্র ঘোষ, বিশিষ্ট ছৌ শিল্পী নেপাল মাহাতো, কৃতী অ্যাথলিট পিঙ্কি পরামানিকের কথা তুলে ধরেন।

An image of the ceremony

গৌতম ঘোষকে সম্মান প্রদান করলেন আচার্য। ছবি: সুজিত মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ০৮:৫৬
Share: Save:

সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিতে এসে মঙ্গলবার মানভূম বা পুরুলিয়ার বিশিষ্ট মানুষজনের কথা তুলে ধরে স্থানীয় আবেগকে উস্কে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ‘নীতি আয়োগ’-এর সদস্য তথা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বিজয় কুমার সারস্বত এবং দেশের কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সচিব তথা ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের ডিরেক্টর জেনারেল হিমাংশু পাঠকও। সমাবর্তনে এ দিন চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষকে ‘ডি লিট’ ও নদী বিশেষজ্ঞ তথা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্রকে ‘ডি এসসি’ দেওয়া হয়। উপাচার্য দীপককুমার কর বলেন, “কোভিডের কারণে গত দু’বছর সমাবর্তন হয়নি। এ বারের সমাবর্তনে আমরা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ ও নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রকে সম্মানিত করেছি। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সম্মান তাঁরা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করছেন বলে জানিয়েছেন।”

এ দিন সমাবর্তন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল মানভূমের স্বাধীনতা সংগ্রামী অতুলচন্দ্র ঘোষ, বিশিষ্ট ছৌ শিল্পী নেপাল মাহাতো, কৃতী অ্যাথলিট পিঙ্কি পরামানিকের কথা তুলে ধরেন। তিন আদিবাসী জনজাতি স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামাঙ্কিত যে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে, শিক্ষাক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই সমাবর্তন জ্ঞানের ভান্ডারের দিগন্ত উন্মোচিত করছে।” নেপোলিয়নের কথা উল্লেখ করে রাজ্যপাল বলেন, “অসম্ভব বলে কিছু হয় না। তবে শিক্ষাকে কর্মমুখী করতে হবে। ...জ্ঞানের মাধ্যমেই প্রকৃত উন্নয়ন আসবে।”

জাতীয় শিক্ষানীতির পক্ষেও সওয়াল করেন রাজ্যপাল। তিনি জানান, এ রাজ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হবে। রাজ্যের নিজস্ব কিছু বিষয় রয়েছে। সেই অনুযায়ী পরিবর্তন করা যেতেই পারে। কর্মসংস্থান খোঁজা নতুন শিক্ষানীতির লক্ষ্য, দাবি করেন বিজয়কুমার সারস্বত। হিমাংশু জানান, এলাকায় একাধিক কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলি ভাল কাজ করছে। কী ভাবে গবেষণা কেন্দ্রগুলির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয় রেখে কাজ করতে পারে, তা ভেবে দেখার কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়, “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া কৃষির বা সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়। পড়ুয়াদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ক্লাসরুমের শিক্ষাকে সমাজের উন্নতির কাজে লাগাতে হবে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিভিন্ন শাখার ৩৩ জনকে ‘পিএইচডি’, ২২ জনকে স্নাতকোত্তর এবং ১২ জন স্নাতক স্তরের পড়ুয়াকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

এ ছাড়া, ৯,৭০৯ জন স্নাতক এবং ১,০২৮ স্নাতকোত্তর পড়ুয়াকে শংসাপত্র দেওয়া হয়। কৃতীদের মধ্যে ছিলেন পদার্থবিদ্যায় শীর্ষস্থান দখল করা বাঘমুণ্ডির সুইসা গ্রামের সুমনা মুখোপাধ্যায়ও। সোমবারই কিডনির রোগে মারা যান তাঁর বাবা। এ দিন ভোররাতে অন্ত্যেষ্টির জন্য পুরুলিয়া মেডিক্যাল থেকে বাবার দেহ গ্রামে পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। মঞ্চে উঠে উপাচার্যের হাত থেকে শংসাপত্র নেওয়ার সময়ে চোখের জল বাঁধ মানেনি আর। সমবেদনা জানান উপাচার্য। সুমনা পরে বলেন, “সমাবর্তনে আসার জন্য একেবারে তৈরি ছিলাম না। বাবার স্বপ্ন ছিল বিভাগের ‘টপার’ হব। বাবাকে তা জানাতে পারলেও তা দেখে যেতে পারলেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CV Ananda Bose Governor purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE