Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Accident

Accident: ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু দিদিমা-নাতির, ভাঙচুর-বিক্ষোভ

বিক্ষোভকারীদের দাবি, অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়ি তীব্র গতিতে রাস্তা দিয়ে ছুটে যায়। প্রায়ই এই এলাকায় ছোট-মাঝারি দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার পরে। ওন্দার মিত্তিরবাঁধে।

দুর্ঘটনার পরে। ওন্দার মিত্তিরবাঁধে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৪৪
Share: Save:

দিদিমার সঙ্গে টোটোয় চড়ে মামারবাড়ি যাচ্ছিল খুদে। রাস্তায় বালি বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হল দু’জনেরই। জখম হলেন টোটো চালক। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ওন্দার মিত্তিরবাঁধ এলাকায় রতনপুর-বিবড়দা রাস্তায়। ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পথ অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের গাড়ি ও ডাম্পারটি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের বড় বাহিনী পাঠানো হয়। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) বিবেক বর্মা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ জানায়, মৃত তৃপ্তি ঘোষের (৫৫) বাড়ি ওন্দার রতনপুর অঞ্চলের বালিগুমা এলাকায়। এ দিন সকালে নাতি মৃন্ময় ঘোষকে (৫) ইঁদপুরের গৌরবাজার অঞ্চলের শ্যামপুরের বাড়ি থেকে নিয়ে বালিগুমায় যাচ্ছিলেন তিনি। একটি টোটো ভাড়া করেছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, উল্টো দিক থেকে আসা বালি বোঝাই ডাম্পারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোটোর পাশে ধাক্কা দেয়। তাতেই টোটো থেকে ছিটকে ডাম্পারের পিছনের চাকায় চাপা পড়ে যান তৃপ্তিদেবী ও মৃন্ময়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। জখম হন টোটো চালক। তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পরেই ডাম্পার ফেলে চম্পট দেয় চালক।

এই ঘটনার পরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছতে ক্ষুব্ধ জনতা গাড়ি ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়ি তীব্র গতিতে রাস্তা দিয়ে ছুটে যায়। প্রায়ই এই এলাকায় ছোট-মাঝারি দুর্ঘটনা ঘটে। এ দিনের দুর্ঘটনার জন্য পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করেন বিক্ষুব্ধেরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ওন্দার চাপড়া, হরিহরপুরের বালিঘাট থেকে ডাম্পারগুলি এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। মাত্রাতিরিক্ত বালি পরিবহণ করা হয়। সে কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। মাঝে মাসখানেক বালির গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু কিছু দিন আবার শুরু হয়েছে।’’ তাঁদের দাবি, ওই রাস্তায় যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দিষ্ট দূরত্বে অন্তর ‘স্পিড ব্রেকার’ বসাতে হবে। বাড়তি বালি বোঝাই গাড়ি চলাচল রুখতে পুলিশকে তৎপর হতে হবে। মৃতের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তাঁরা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “ওই ডাম্পারটির বালি পরিবহণের উপযুক্ত কাগজপত্র ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রামবাসীর দাবি শোনা হয়েছে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। ডাম্পারটি আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ এ দিন মৃন্ময়ের বাবা হৃদয় ঘোষ কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তাঁদের পড়শি মঙ্গল বাঙাল বলেন, “কিছু দিন আগেই হৃদয়ের স্ত্রীর অস্ত্রপচার হয়েছে। মেয়েকে দেখতে এসেছিলেন তৃপ্তিদেবী। ফেরার পথে, মৃন্ময় মামারবাড়ি যাওয়ার ঝোঁক ধরলে, তাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই ঘটনায় আমরা শোকস্তব্ধ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Accidental Death bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE