পাইকর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বোমায় আহত কিশোর। — নিজস্ব চিত্র।
রাজনীতি বোঝার বয়সই তার হয়নি। তবু, ভোট-রাজনীতির হিংসার শিকার সে। রবিবার, পঞ্চায়েত ভোটের পরের দিন দু’দলের বোমাবাজিতে আহত হয় বছর এগারোর আব্দুল মোতালেব। এখন সে কিছুটা সুস্থ। কিন্তু সেই নাবালকের ঠাকুরমার আর্তি, ভোটের নামে হিংসা এ বার বন্ধ হোক!
রবিবার বিকেলে বোমায় জখম হয় পাইকর থানার কুতুবপুরের বাসিন্দা মোতালেব। তার ডান পায়ে, হাত ও চোখের কাছে আঘাত লাগে। পাইকর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু, টাকার অভাবে রামপুরহাটে না নিয়ে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা মোতালেবকে টোটো করে বাড়ি নিয়ে যান। পাইকর ১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান আব্দুল গনির নজরে এলে তিনি টাকা দিয়ে রাতেই আহত ছেলেটিতে রামপুরহাট মেডিক্যালে পাঠান। বোমাবাজির ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
গ্রামবাসীর একাংশ ও পরিবারের অভিযোগ, ভোট এলেই গ্রাম উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। যে মানুষগুলো অন্যান্য সময় এক সঙ্গে থাকেন, একে অন্যের বিপদে ছুটে যান, ভোটের সময় তাঁরাই বদলে যান। মারামারিতে জড়ান তুচ্ছ বিষয়ে। তাঁদের বক্তব্য, মোতালেব তো কোনও দল করে না। অথচ সে হাসপাতালের বিছানায় ব্যথায় ছটফট করছে। এই রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার।
মোতালেবের ঠাকুমা নাজেরা বিবি সোমবার বলেন, ‘‘ঘটনার সময় রাতের রান্না করছিলাম। মোতালেব ঘরেই ছিল। বোমা পড়ার আওয়াজ পেয়ে দরজা বন্ধ করতে গিয়ে দেখি মোতালেব ঘরে নেই। বাইরে তখন তুমল গণ্ডগোল। বোমার আওয়াজে বুক কাঁপতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে দেখি কয়েক জন মোতালেবকে নিয়ে আসছে রক্তাক্ত অবস্থায়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার। মোতালেবের মতো বাচ্চাদের প্রাণ চলে গেলে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না রাজনৈতিক দলের নেতারা।’’
এখন কিছুটা সুস্থ আছে মোতালেব। ঘটনার পরে মোতালেবের চোখেমুখে যে আতঙ্কের ছাপ দেখা গিয়েছিল, তা অনেকটাই কেটেছে বলে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন। তবে আঘাতের চার জায়গায় ব্যথা এখনও আছে বলে জানান তার মা মধুমালা বিবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy