Advertisement
E-Paper

দাদুর বিরুদ্ধে প্রার্থী নাতি, মনোনয়নেই দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

ওয়ার্ডে দলীয় কর্মীদের বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল প্রসঙ্গে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী একরামুল হক বলেন, ‘‘এর আগের নির্বাচনে যারা দলের মধ্যে থেকেও আমার ক্ষতি করেছিল তারাই এ বার আমার সরাসরি বিরোধিতা করছে। এতে আমার প্রকৃত বিরোধী কারা ওয়ার্ডবাসী জানতে পারছে। আমি ওয়ার্ডবাসীর সুখে দুখে যেমন আগেও থেকেছি তেমনি থাকতে চাই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০২:০৫
জমায়েত: মনোনয়ন জমা দিতে এসে রামপুরহাট মহকুমা কার্যালয়ের সামনে কংগ্রেস কর্মীদের জমায়েত। বুধবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

জমায়েত: মনোনয়ন জমা দিতে এসে রামপুরহাট মহকুমা কার্যালয়ের সামনে কংগ্রেস কর্মীদের জমায়েত। বুধবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

একুশে জুলাইয়ের প্রচারে বেরিয়ে কর্মীদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার ডাক দিয়েছেন নেতারা। ঠিক তার আগের দিন, বুধবারই নলহাটি পুরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে উল্টো ছবি দেখা গেল। কোথাও প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ, কোথাও বা ঘোষিত প্রার্থী অনুপস্থিত!

মাস তিনেকের প্রস্তুতি নিয়েও তৃণমূল তাদের প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ যে মেটাতে পারেনি এ দিন আরও একবার প্রমাণ হল। অনেকে মনে করছেন, প্রার্থী নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকার জন্য যাতে দলের কর্মীদের কেউ গোঁজ প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে না প্রতিদ্বন্ধিতা করতে পারে তার জন্যই মনোনয়নপত্র দাখিলের প্রথম এবং দ্বিতীয় দিন এসডিও অফিসের সামনে কর্মীদের জমায়েত করেছিল তৃণমূল। কিন্তু প্রথমদিনই অর্থাৎ শতাধিক কর্মীদের জমায়েতের মধ্যেই মহকুমাশাসকের অফিস থেকে নলহাটি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বিক্ষুব্ধ দুই তৃণমূল কর্মী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমার ফর্ম তুলে নিয়ে যান। বুধবার ওই দু’জন নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা করার জন্য মহকুমাশাসকের অফিসে আসেন। কিন্তু কাগজপত্রে গণ্ডগোল থাকার জন্য তাঁরা ঘুরে যান। তাঁরা হলেন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী একরামুল হক ওরফে তোতার নাতি নুরুল মোর্তাজা ওরফে রাজেশ। আর একজন তৃণমূল কর্মী লখু শেখ ।

এ দিন দাদুর বিরুদ্ধে নির্দলপ্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা করতে এসে রাজেশ বলেন, ‘‘২০১২ সালে দাদু যখন পুরসভা ভোটে ওয়ার্ডে পরাজিত হয় তারপর থেকেই ১২ নম্বর ওয়ার্ডে একজন তৃণমূল কর্মী হিসাবে সব সময় ওয়ার্ড বাসীর পাশে থেকেছি। এবং এ বার ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে আমিই প্রথম দাবিদার ছিলাম। কিন্তু দল আমাকে প্রার্থী না করে ওয়ার্ডে একজন হারা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। সেই ক্ষোভে ওয়ার্ডে আমার প্রভাব কতটা আছে সেটা প্রমাণ করার জন্য আমি নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে চাই।’’

ওয়ার্ডে দলীয় কর্মীদের বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিল প্রসঙ্গে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী একরামুল হক বলেন, ‘‘এর আগের নির্বাচনে যারা দলের মধ্যে থেকেও আমার ক্ষতি করেছিল তারাই এ বার আমার সরাসরি বিরোধিতা করছে। এতে আমার প্রকৃত বিরোধী কারা ওয়ার্ডবাসী জানতে পারছে। আমি ওয়ার্ডবাসীর সুখে দুখে যেমন আগেও থেকেছি তেমনি থাকতে চাই।’’ তাঁর দাবি, তিন জন প্রার্থী পদের দাবিদার ছিল। দল তাঁকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছে।

দলীয় প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভের ব্যাপারে নলহাটি পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তৈরি সাত জনের কমিটির চেয়ারম্যান মইনুদ্দিন শামস বলেন, ‘‘তৃণমূল পরিবারের মধ্যে যদি কেউ ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখিয়ে থাকেন সেটা আমরা মিটিয়ে নেব। তবে প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোনও ক্ষোভ বা বিক্ষোভ নাই।’’ ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ঘোষিত তৃণমূল প্রার্থী আয়েষা সিদ্দিকাকে নিয়েও দলের মধ্যে অসন্তোষ থাকার জন্য এ দিন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। এক্ষেত্রেও মইনুদ্দিন বলেন , ‘‘এখানে ঘোষিত প্রার্থী অসুস্থতার জন্য আসতে পারেননি। ওই ওয়ার্ডে অন্য কোনও প্রার্থী নিয়ে দলে চিন্তা ভাবনা করছে। তবে কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভ নেই।’’

তৃণমূলের অন্দরে এমন ক্ষোভ-বিক্ষোভ চললেও, নলহাটি পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল বুধবার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিল। কংগ্রেসও ৮টি ওয়ার্ডে তাদের ঘোষিত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা করে। বিজেপি অবশ্য এ দিন কোনও মনোনয়ন পত্র জমা করেনি।

tmc Nomination agitation Inter party clash তৃণমূল কংগ্রেস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy