E-Paper

তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্বে’ সংঘর্ষ, জখম ৫

দলীয় সূত্রের খবর, কেরিমকে টিকিট-বঞ্চিত করার পর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চোরাস্রোত বইছিল। বুধবার রাতে তারই বহিঃপ্রকাশ বাইতারা গ্রামে ঘটেছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৫০
বাইতারা গ্রামের রাস্তায় পুলিশের টহল। বৃহস্পতিবার।

বাইতারা গ্রামের রাস্তায় পুলিশের টহল। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের দ্বন্দ্বে উত্তেজনা ছড়াল নানুর থানার বাইতারা গ্রামে। বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। উভয় পক্ষের পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিরা নানুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত সভাধিপতি কাজল শেখের অনুগামীদের সঙ্গে প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খানের অনুগামীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুই পক্ষের ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, জমি-দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়ানো কেরিম খানের উপরে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেরিমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার নির্দেশ জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের দিয়েছিলেন। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত এই নেতাকে এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিটও দেওয়া হয়নি। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয় কাজল শেখকে।

দলীয় সূত্রের খবর, কেরিমকে টিকিট-বঞ্চিত করার পর থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চোরাস্রোত বইছিল। বুধবার রাতে তারই বহিঃপ্রকাশ বাইতারা গ্রামে ঘটেছে বলে স্থানীয়দের দাবি। দু’পক্ষের সংঘাতে তেতে ওঠে গ্রাম। স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় কেরিমের অনুগামী হিসাবে পরিচিত প্রাক্তন বুথ সভাপতি আইনুল শেখের বাড়িতে একটি বৈঠক ডাকা হয়। তাতে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় কিতাবুল খান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ কিতাবুলের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তবে, হামলাকারীরাও পাল্টা মার খান। লাঠি ও ভোজালির আঘাতে কয়েক জন জখম হন। খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী গ্রামে যায়।

কিতাবুল ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও বৃহস্পতিবার আইনুলের দাবি, দলের কাজের জন্য পার্টি তহবিল থেকে একটি মোটরবাইক কেনা হয়েছিল। দলের কিছু তৃণমূল কর্মী ওই বাইক বিক্রি করে দেন। এই নিয়ে দলের একাংশে ক্ষোভ ছিল। আইনুল বলেন, ‘‘কেরিম খানের মধ্যস্থতায় বাইক বিক্রির টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা আমাকে দেওয়া হয়। সেই টাকা বন্যার সময় সর্বসম্মতিক্রমে ত্রাণের কাজে খরচ করা হয়েছিল। এখন ওরা (যাঁরা বাইক বিক্রি করেছিলেন বলে অভিযোগ) কাজল শেখের শিবিরে যোগ দিয়ে টাকাটা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। সেই বিষয় নিয়েই আলোচনা করার জন্য বুধবার কয়েক এসেছিলেন আমার বাড়িতে। সেই আক্রোশে কাজলের লোকজন কিতাবুলদের বাড়িতে হামলা হয়।’’

এ দিন কাজল শেখকে ফোন করে এবং মেসেজ পাঠিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে, নানুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠী নেই। কিছু দুষ্কৃতী ওখানে দুষ্কৃতীরাজ কায়েম করার জন্য আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে। তাতে আমাদের দু'জন আহত হয়েছেন।’’ অন্য দিকে কেরিম খান বলেন, ‘‘ওই গ্রামে একটা ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। কেন ঝামেলা হয়েছে বলতে পারব না। তবে, দু’পক্ষই আমাদের লোক।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nanur TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy