বালি মাফিয়াদের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাস্তাঘাট খারাপ হওয়ার অভিযোগ তো রয়েইছে, তার উপরে যথেচ্ছ বালি তোলার জেরে টান পড়েছে পানীয় জলের ভাঁড়ারে। বালি মাফিয়াদের শিকড় অনেক গভীরে ছড়ানো বলে অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেচ দফতরের আধিকারিকদের একাংশও দাবি করেছিলেন, বালি চুরি আটকাতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাঁদের। অবৈধ বালির গাড়ি আটকানোয় তাঁদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ধরণের পরিস্থিতিতে এ বার সরাসরি এফআইআর করার নির্দেশ দিল সেচ দফতর। সম্প্রতি দফতরের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
জেলার যে সমস্ত নদী-ঘাটে জল প্রকল্পের পাম্পিং স্টেশন রয়েছে সেখানে বালি তোলা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছিলেন, ওই ঘাটগুলিতে বালির স্তর কমে যাওয়ায় জল প্রকল্প সঙ্কটের মুখে পড়েছে। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কংসাবতী নদীর তেলেডি ও শিমূলিয়া ঘাটের পাম্পিং স্টেশন থেকে পানীয় জল আসে পুরুলিয়া শহরে। দু’টি ঘাটের একাধিক উৎসেই জলের ভাঁড়ার তলানিতে ঠেকেছে। দু’বেলার পরিবর্তে এক বেলা জল সরবরাহ করছে পুরসভা। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে সতর্কবার্তা পাঠানোর পরেও পরিস্থিতির বিশেষ হেরফের হয়নি।
পুর এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরে জলের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ লেগেই রয়েছে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে পুরপ্রধান কে পি সিংহ দেও দফতরে চিঠি লিখে ওই দু’টি ঘাট থেকে বালি তোলা কঠোর ভাবে বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘যে ঘাটগুলি থেকে পানীয় জল ওঠে সেখানে যথেচ্ছ বালি তোলা হলে শহরের মানুষ ঘোরতর সঙ্কটে পড়বেন। অবিলম্বে বালি মাফিয়াদের না ঠেকানো গেলে জলের সমস্যা দিন দিন আরও বেড়েই চলবে।’’
মাফিয়াদের শক্ত হাতে দমন করা যে জরুরি, তা মানছেন সব পক্ষই। কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমি নিজেই দেখেছি, অবৈধ বালির গাড়ি পাকড়াও করলেই ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ফোন আসতে শুরু করে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাঝে মধ্যেই অবৈধ বালির গাড়ি পাকড়াও করে জরিমানা করা হয়। মামলা রুজু করা হয়। সেচ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, আগে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মাফিয়াদের থেকে অনুরোধ আসত। ইদানীং সরাসরি হুমকি আসতে শুরু করেছে। সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার কৌস্তভজ্যোতি পালের অভিযোগ, অবৈধ বালির গাড়ি ধরার পরে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে কয়েক জন আধিকারিককে। তিনি বলেন, ‘‘সব দিক বিবেচনা করে আমরা এই নির্দেশ জারি করেছি। বলা হয়েছে, এ বার থেকে বালির গাড়ি আটকানোর পরে হুমকি বা কোনও প্রকার হেনস্থার শিকার হলে আধিকারিকেরা সরাসরি এফআইআর করবেন।’’ তনিনি জানান, নির্দেশের কপি জেলা পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
রাইপুরে সচেতনতা। বাঁকুড়া জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এবং রাইপুর ব্লকের মেলেড়া পঞ্চায়েতের সহায়তায় শুক্রবার দুপুরে আইনি সচেতনতা শিবির হল। মেলেড়া পঞ্চায়েতের কমিউনিটি হলে এ দিন দুপুরে এই শিবিরে রাধানগর, লুড়কা, মেলেড়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের তিনশোর বেশি মহিলা ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। মেলেড়ার পঞ্চায়েত প্রধান রাজকুমার সিংহ জানান, শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সম্পাদক দুর্গাশঙ্কর রানা-সহ বিশিষ্টজনেরা। শিবিরে নারী নির্যাতন, কন্যাভ্রুণ হত্যা, ইভটিজিং-সহ নানা বিষয় রুখতে কী করণীয় তা নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি মহিলারা নিখরচায় কী ভাবে আইনি পরিষেবা পাবেন, জমিজমা সংক্রান্ত ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপে কী মিলবে সে সব সম্পর্কে আলোচনা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy