E-Paper

জামিনে ফেরেন জীবন, ধরা পড়ায় সমস্যা

এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, নানুর দেবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষক হিসাবে ২০১২ সালের ১৪ অগস্ট যোগ দেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। স্কুলে ইতিহাস পড়ান।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৪৮
গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা।

গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ছবি: পিটিআই।

বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের গ্রেফতার হয়েছেন। সিবিআইয়ের পরে এ বার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে। এতে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নানুর দেবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। কারণ, বড়ঞার বিধায়ক বীরভূমের ওই স্কুলের শিক্ষকও বটে।

এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, নানুর দেবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষক হিসাবে ২০১২ সালের ১৪ অগস্ট যোগ দেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। স্কুলে ইতিহাস পড়ান। সহকর্মী থেকে স্কুলের পরিচালন সমিতি, সব পক্ষ শিক্ষক হিসেবে জীবনকৃষ্ণের প্রশংসা করেছেন। স্কুল সূত্রের খবর, ২০২১ সালে শাসকদলের টিকিটে জিতে বিধায়ক হওয়ার আগে পর্যন্ত সহ-শিক্ষকের দায়িত্বে ঠিকঠাক ভাবেই পালন করেছিলেন। পড়ুয়া সহশিক্ষক থেকে এলাকাবাসী কারও কোনও অভিযোগ ছিল না জীবনকৃষ্ণকে ঘিরে। এমনকি বিধায়ক হওয়ার পর সময় পেলেই স্কুলে এসে পাঠ দিতেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই সময় প্রায় ১৩ মাস জেলে থাকতে হয়েছিল জীবনকৃষ্ণকে। গত বছর এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে তিনি ফিরেছিলেন স্কুলে। বিধায়ক হিসাবে ব্যস্ততা না থাকলে মাঝে মধ্যেই স্কুলে এসে ক্লাস নিয়েছেন। স্কুল থেকে ৩০ কিমি দূরে থাকতেন। ফের গ্রেফতার হওয়ায় সেই রাস্তা আবার বন্ধ।

কোন অভিযোগ গ্রেফতার হলেন, তিনি দুর্নীতি করেছেন কি না, সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ জানান, এক জন শিক্ষক কম গেলে কিছুটা অসুবিধা হবেই। স্কুলে এই মুহূর্তে প্রায় চারশো ছাত্রছাত্রী রয়েছে। মাধ্যমিক স্কুল হওয়ায় প্রত্যেক শিক্ষককে পঞ্চম থেকে অষ্টম একাধিক বিষয় পড়াতে হয়। নবম-দশম যে যাঁর বিষয় পড়ান। প্রধান শিক্ষক নিয়ে মোট শিক্ষকের সংখ্যা (জীবনকৃষ্ণ-সহ ) ১১ জন। প্রধান শিক্ষক প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে শিক্ষকের সংখ্যা কার্যত নয়ে দাঁড়াল।

তবে, জীবনকৃষ্ণ ভালই পড়াতেন বলে জানিয়েছে পড়ুয়ারা। বর্তমানে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অষ্টম দাস বৈরাগ্য, রামকৃষ্ণ দাসেরা বলছে, ‘‘১৯ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় স্যরের কাছে পাঠ নিয়েছি। স্যর ভাল পড়াতেন। শাসনও করতেন। একবার গোটা ক্লাসকে কলম উপহার দিয়েছিলেন।’’ ওই ছাত্রদের কথায়, ‘‘কী করেছেন তিনি জানি না। তবে এ সব শুনলে মন খারাপ হয়।’’

প্রধান শিক্ষক কমলকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে স্কুলে যোগ দেওয়ার পর থেকে বিধায়ক হওয়ার আগে পর্যন্ত নিয়মিত স্কুলে আসতেন, সহ শিক্ষক, পড়ুয়াদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। কখনও কোনও অভিযোগ শুনিনি।’’ বর্তমানে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি বৃন্দাবন দাস বৈরাগ্য বলছেন, ‘‘সবে পদে এসেছি। ওই বিধায়ক শিক্ষকের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ নেই। শুনেছি, তিনি মাঝে মাঝে স্কুলে আসতেন।’’ পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সভাপতি মানব আচার্য জানান, বিধায়ক হওয়ার পরে জীবনকৃষ্ণ মাঝে মধ্যে স্কুলে আসতেন। যে দিন স্কুলে এসেছেন, হাজিরা খাতায় সই করেছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Burwan Jiban Krishna Saha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy