E-Paper

সহ-সভাপতি হয়েও শিল্পকাজে জ্যোৎস্নার আলো

পঞ্চায়েত সমিতির তফসিলি সংরক্ষিত ২১ নম্বর আসনে তৃণমূল কর্মী রামপিরিতের স্ত্রী জ্যোৎস্নাকে প্রার্থী করে দল।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ০৯:০৬
কাজে মগ্ন। কোটশিলার বেগুনকোদরে। নিজস্ব চিত্র

কাজে মগ্ন। কোটশিলার বেগুনকোদরে। নিজস্ব চিত্র debasishbanerjee981@gmail.com

বাঁশের গৃহস্থালি সরঞ্জাম তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে যান পুরুলিয়ার বেগুনকোদরের জ্যোৎস্না কালিন্দী। তিনি ঝালদা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হওয়ায় পড়শিরা গর্বিত। কিন্তু হস্তশিল্পীর পেশা ছাড়তে নারাজ জ্যোৎস্না।

বাঁশ কেটে টুকি-খাঁচি (গৃহস্থালী সরঞ্জাম) তৈরির ফাঁকে তিনি বলেন, ‘‘এই পেশাই আমাদের পেট ভরায়। কিন্তু জনতার ভোটে জিতে সহ-সভাপতির পদের মেয়াদ কয়েকটা বছর। তাই জনতার কাজ করার ফাঁকেই নিজের পেশা আঁকড়ে থাকতে চাই।’’

তিন সন্তান, ছৌ-শিল্পী স্বামী রামপিরিত কালিন্দী ও শাশুড়ি বিমলা কালিন্দীকে নিয়ে জ্যোৎস্নার সংসার। বেগুনকোদরের কালিন্দীপাড়ায় কাঁচা-পাকা বাড়িতে বাস। সপরিবারে বাঁশের সরঞ্জাম তৈরি করেন। বিক্রি করতে যান বেগুনকোদর বাজার ও ঝালদার পশুহাটে।

পঞ্চায়েত সমিতির তফসিলি সংরক্ষিত ২১ নম্বর আসনে তৃণমূল কর্মী রামপিরিতের স্ত্রী জ্যোৎস্নাকে প্রার্থী করে দল। জীবনে প্রথমবার ভোটে দাঁড়ালেও কংগ্রেস প্রার্থীকে সামান্য ভোটে পরাজিত করেন জ্যোৎস্না। সহ-সভাপতির আসন তফসিলি সংরক্ষিত হওয়ায় সেই পদও পেয়ে যান তিনি।

প্রশাসন সূত্রের খবর, এক জন সহ-সভাপতির পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে আলাদা চেম্বার থাকে। সাম্মানিক হিসেবে মাসিক সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা পান। সমিতির প্রতিটি স্থায়ী সমিতির সদস্যও হন সহ-সভাপতি। সভাপতি দীর্ঘকালীন সময় ছুটিতে থাকলে তখন সেই দায়িত্ব সামলাতে হয় সহ-সভাপতিকেই। কিন্তু অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা জ্যোৎস্না এ সব নিয়ে আপাতত ভাবিত নন। তিনি বলেন, ‘‘বাঁশের কাজ করেই জনতার সেবা করব।’’

তাঁর স্বামী রামপিরিত ছৌনাচের মরসুমে বাইরে ঘোরাঘুরি করেন। কিন্তু মরসুম ফুরোলে ঘরে বসে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে বাজারে বেচতে যান।

তিনিও বলেন, ‘‘স্ত্রীর সহ-সভাপতির পদও পাঁচ বছরের জন্য। কিন্তু সারা বছর বাপ-ঠাকুরদার এই পেশাই আমাদের রুটিরুজির ভরসা। তাই এ কাজে অবহেলা নয়।’’

তৃণমূলের বেগুনকোদর অঞ্চলের সহ-সভাপতি রাধেশ্যাম অধিকারী বলেন, ‘‘দল চায় এই সমস্ত পদে সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিরা থাকুক। এতে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের কাজে আরও গতি আসবে।’’

বিডিও (ঝালদা ২) অঙ্কিতা উপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুনেছি তিনি অভাবী পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। ভাল কাজ করার শুভেচ্ছার পাশাপাশি জ্যোৎস্নাকে অভিনন্দনও জানাই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Handicraft

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy