E-Paper

ছাত্র-মনের গোপন সমস্যা জানছে কলেজ

কলেজ সূত্রে খবর, পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নজর দিতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষ মনস্তত্ত্ব বিষয়ক সেল গঠন করেছে।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৫ ০৭:২২
হেতমপুর কৃষ্ণচন্ত্র কলেজ।

হেতমপুর কৃষ্ণচন্ত্র কলেজ। —ফাইল চিত্র।

কেউ ‘চাপের’ জন্য পছন্দের বিষয় পড়তে পারেননি। কেউ আবার একাকিত্বে ভোগেন। কারও সমস্যা মোবাইলের নেশা। পড়ুয়াদের এমন নানা সমস্যার কথাই উঠে এল দুবরাজপুরের শতাব্দীপ্রাচীন হেতমপুর কৃষ্ণচন্ত্র কলেজের করা সমীক্ষায়। কলেজ সূত্রে খবর, জেলা সদর সিউড়িতে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর সাথে মউ সাক্ষর করেছে কলেজ। ঠিক হয়েছে তিনিই এই সমস্যাগুলি সমাধানের ব্যাপারে সাহায্য করবেন।

কলেজ সূত্রে খবর, পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নজর দিতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষ মনস্তত্ত্ব বিষয়ক সেল গঠন করেছে। সেটিকে কলেজের নিজস্ব ওয়েবসাইটের সঙ্গে জুড়েও দেওয়া হয়েছে। সেলের দায়িত্বে আছেন তিন জন শিক্ষক, শিক্ষিকা। অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা, প্রত্যাশার চাপ, ব্যর্থতার ভয় বা উদ্বেগ, একাকিত্ব-সহ নানা কারণে পড়ুয়াদের অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। সেই সমস্যা কাটাতেই এই ভাবনা।’’

সেল গঠনের পর পড়ুয়াদের প্রতি অধ্যক্ষের আহ্বান, কোনও ছাত্র বা ছাত্রী যদি কোনও মানসিক সমস্যায় থেকে থাকেন তিনি যেন কলেজের ওয়েবসাইটে ঢুকে গুগল ফর্ম পূরণ করেন। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘এমন কোনও সমস্যা যদি থাকে, যা কোনও ছাত্র বা ছাত্রী কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছেন না, সে ক্ষেত্রে ওই ফর্মের মাধ্যমে জানালে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কাউন্সিলর ওই পড়ুয়াদের সাহায্য করবেন।’’ ওই সেলের দায়িত্ব থাকা এক শিক্ষিকা শাবানা সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, সবে সেলটি গঠিত হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ছাত্র এবং ছাত্রী তাঁদের সমস্যার কথা গুগল ফর্ম মারফত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।’’

কলেজ সূত্রে খবর, সেল জানতে পেরেছে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া নানা কারণে মানসিক উদ্বেগে রয়েছেন। কেউ জানিয়েছেন, পরিবার যে বিষয় বা শাখায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, তা সেই পড়ুয়ার পছন্দের ছিল না। কারও আবার চাপ দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কেউ খুব একাকিত্বে ভুগছেন, আত্মহননের কথা মাথায় আসছে। কেউ আবার বলেছেন, তাঁর নিজের মনের অবস্থা কী সেটাই প্রকাশ করতে পারছেন না। রাতে ঘুম হচ্ছে না। কেউ লিখেছেন, মোবাইল ও সমাজমাধ্যমে সময় কাটানোর অভ্যেস ছেড়ে তাঁরা বেরিয়ে আসতে পারছেন না।

ঘটনা হল, শিক্ষাঙ্গনে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা ক্রমশই খারাপ হচ্ছে বলে তথ্য থেকে উঠে আসছে। আইআইটি-র মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কলেজ সূত্রে খবর, কী ধরনের সমস্যা উঠে আসছে, কত জন শিক্ষার্থী সাহায্য চাইছেন ইত্যাদি বিষয়গুলি বিবেচনা করে প্রাথমিক ভাবে একটি সেমিনার করা হবে। প্রয়োজনে সেই ছাত্র বা ছাত্রীদের কাউন্সেলিং করানোর ভাবনাও রয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Birbhum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy