Advertisement
E-Paper

এক ঘরে চার ক্লাস, স্কুল ছাড়ছে পড়ুয়ারা

মেরেকেটে ৩০ বাই ৪০ ফুটের ঘর। তাতেই চলছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত জুনিয়র হাইস্কুল। এক দিন, দু’দিন নয়— বছরের পর বছর। টিচার্স ও অফিস রুম হিসাবেও ওই ঘরটি ব্যবহৃত হয় সাঁইথিয়া হরিসরা পঞ্চায়েতের ভবানীপুর জুনিয়র হাইস্কুলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২২
এ ভাবে কি পড়াশোনা হয়, প্রশ্ন অভিভাবকদের। ছবি: অনির্বাণ সেন।

এ ভাবে কি পড়াশোনা হয়, প্রশ্ন অভিভাবকদের। ছবি: অনির্বাণ সেন।

মেরেকেটে ৩০ বাই ৪০ ফুটের ঘর। তাতেই চলছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত জুনিয়র হাইস্কুল। এক দিন, দু’দিন নয়— বছরের পর বছর। টিচার্স ও অফিস রুম হিসাবেও ওই ঘরটি ব্যবহৃত হয় সাঁইথিয়া হরিসরা পঞ্চায়েতের ভবানীপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। অভিভাবকদের অভিযোগ, একটা ঘরে চারটি ক্লাস-সহ স্কুলের যাবতীয় কাজকর্ম হওয়ার ফলে পঠনপাঠনের মান দিন দিন তলানিতে ঠেকছে। সে কথা মেনেও নিয়েছেন টিচার-ইন-চার্জ সৌরভ অধিকারী।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ভবানীপুরের তিন, চার কিলোমিটারের মধ্যে কোনও হাইস্কুল নেই। প্রাথমিকের পর ভবানীপুর, লোলিয়াপুর, কালা-সহ এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় অসুবিধে দেখে এলাকায় জুনিয়র হাইস্কুলের দাবি ওঠে। সেই মতো সাঁইথিয়া চক্রের স্কুল পরিদর্শকের তরফে বাসিন্দাদের জানানো হয়, জায়গা পেলে জুনিয়র স্কুলের অনুমোদন দেওয়া হবে। এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কথা ভেবে ভবানীপুর গ্রামের দুলাল মণ্ডল ও তাঁর পরিবার গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের কাছাকাছি রাস্তার ধারে ১০ কাঠা জমি দান করেন। সেটা ২০১১ সাল। পরে ওই জায়গায় একটি ঘরে স্কুল চালু হয়। ফি বছর ক্লাস বাড়তে থাকলেও ক্লাস-ঘর বাড়েনি। ২০১৪ সালে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চালু হয়।

পড়ুয়া থেকে অভিভাবক, জমিদাতা থেকে স্থানীয় বাসিন্দা—সকলেরই অভিযোগ, এতগুলি বছর কেটে গেল এখনও স্কুল-ঘর বাড়ল না। একটি ঘরেই ১০৭ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে চারটি ক্লাস, অফিস ও টিচার্স রুম!

ক্লাস করতে অসুবিধে হয়?

অষ্টম শ্রেণির ইন্দ্রজিৎ দাস, দেবব্রত মণ্ডল, রাজু বারুই, চন্দন বাগদিরা জানাল, চারপাশের কথাবার্তায় স্যারের কথা ঠিকমতো শোনা যায় না। পড়ায় মন বসে না। বসতেও সমস্যা হয়। একই কথা জানাল পঞ্চম শ্রেণির পিঙ্কি বিশ্বাস, মৌমিতা দাসরা।

এই পরিস্থিতিতেও স্কুলে না পাঠিয়ে উপায় নেই অভিভাবকদের। ভবতোষ দাস, সুকুমার দত্তরা বলেন, ‘‘কাছের স্কুল তিন-চার কিলোমিটার দূরে। সেখানে যাতায়াতের সমস্যার জন্যেই ছেলেকে গ্রামের স্কুলে ভর্তি করেছিলাম। এখন স্কুলে পড়াশোনা হয় না বলেই শুনি। কিন্তু, আর উপায়ই বা কি!’’ কেউ কেউ কষ্ট মেনে নিয়েই দূরের স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাতে শুরু করেছেন।

সমস্যার কথা মানছেন টিচার-ইন-চার্জ সৌরভ অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘একটা ঘরে চারটে ক্লাস করতে খুব অসুবিধে হয়। পাশের রান্নাঘরের চালায় বসে পড়ুয়ারা দুপুরের খাবার খায়। ঠিক মতো পড়াশোনা না হওয়ায় অনেকই দূরের স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাতে শুরু করেছে।’’ এক সহ শিক্ষক জানান, ঘরের সমস্যা মিটলে পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি হত। স্কুলের পড়ুয়াও এত দিনে দু’শো ছাড়িয়ে যেত। কবে মিটবে সমস্যা? এসআই সৌগত ভট্টাচার্যের জবাব, ‘‘ওই স্কুলের ঘরের ব্যাপারে সর্বশিক্ষা মিশনকে জানানো হয়েছে।’’ ওইটুকুই, কাজের কাজ কবে হয় দেখার সেটাই।

Classroom Students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy