Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Cleaning Staff

Cleaning: স্বেচ্ছাশ্রমে সাফ করাই নেশা লক্ষ্মীকান্তের

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ লক্ষ্মীকান্তকে দেখা গেল খাতড়া শহরের অদূরে, খাতড়া-রানিবাঁধ রাস্তায় দেদুয়া ক্যানাল ব্রিজের রাস্তার পাশে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করতে।

চলছে সাফাই।

চলছে সাফাই। ছবি: সুশীল মাহালি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

সেতু, কজ়ওয়ে বা যাত্রী প্রতীক্ষালয়, কোনও জায়গায় আবর্জনা দেখলে স্থির থাকতে পারেন না তিনি। ধামা, গাঁইতি, কোদাল নিয়ে নেমে পড়েন সাফ করতে। সঙ্গে কিছু খাবার বেঁধে নিয়ে, সাইকেল চালিয়ে দূরের গ্রামে হাজির হয়েও স্বেচ্ছাশ্রমে এমন আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করেন বাঁকুড়ার রাইপুরের অমৃতপাল গ্রামের বছর একান্নর লক্ষ্মীকান্ত মান্ডি।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ লক্ষ্মীকান্তকে দেখা গেল খাতড়া শহরের অদূরে, খাতড়া-রানিবাঁধ রাস্তায় দেদুয়া ক্যানাল ব্রিজের রাস্তার পাশে জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করতে। তাঁর সাইকেলের সামনে লেখা রয়েছে ‘সেবাশ্রম সমাজসেবী’। দেওয়া রয়েছে তাঁর ফোন নম্বরও। গত সাত বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় স্বেচ্ছশ্রমে সাফাই করে আসছেন, জানান তিনি।

প্রৌঢ় জানান, তাঁর বিঘা দু’য়েক জমি আছে। সেই সঙ্গে দিনমজুরি করেন। পরিবারে স্ত্রী, ছেলেমেয়ে রয়েছেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে ইটভাটায় কাজ করেন। লক্ষ্মীকান্ত জানান, কাজকর্মের ফাঁকে সাফাই করা তাঁর নেশা। মাঝেমাঝে স্ত্রী, ছেলেও তাতে হাত লাগান। শুধু বাঁকুড়া নয়, পড়শি জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, এমনকি, ঝাড়খণ্ডে গিয়েও এই কাজ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কংসাবতীর উপরে রাইপুরের সেতু, খাতড়ার কেচন্দা ঘাটের সেতু, ভৈরববাঁকি সেতু প্রায়ই পরিষ্কার করেন তিনি। এই কাজের কারণ কী? লক্ষ্মীকান্ত বলেন, ‘‘সরকারি এ সব সম্পদে নোংরা-আবর্জনা দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। সরকারের পাশাপাশি, আমাদেরও এগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত বলে মনে করি। তাই সাফ করি।’’

স্থানীয় দেদুয়া গ্রামের বাসিন্দা তারাপদ পাল, খাতড়ার বাসিন্দা উমাপদ মাহাতোরা জানান, দেদুয়া ক্যানাল ব্রিজে রাস্তার দু’দিক আবর্জনা ও আগাছায় ভরে ছিল। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ এক জনকে পরিষ্কার করতে দেখা যায়। তাঁকে জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, সরকারি উদ্যোগ নয়, তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে এই কাজ করছেন। তাঁরা জানান, লক্ষ্মীকান্তকে কিছু খাওয়াতে চাইলেও, তিনি রাজি হন না।

বিডিও (রাইপুর) রঞ্জন সর্দার বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। যদি কেউ এমন কাজ করেন, তা প্রশংসার যোগ্য।’’ প্রশাসনের তরফেও সাফাই করা হয় বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cleaning Staff
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE