E-Paper

বাধা আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, সংখ্যা কমেছে সরস্বতী প্রতিমার

সাজিনা হাই স্কুলের পাশে গেলেই সার দিয়ে মাটির প্রতিমা তৈরির কারখানা চোখে পড়বে। এই কারখানাগুলিতে গ্রামেরই সাতটি মৃৎশিল্পীর পরিবার নানা মূর্তি তৈরি করে।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৭
সরস্বতী প্রতিমায় রূপটানে মগ্ন শিল্পী। সিউড়ির সাজিনা গ্রামে।

সরস্বতী প্রতিমায় রূপটানে মগ্ন শিল্পী। সিউড়ির সাজিনা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র ।

মূর্তি তৈরির জন্য মিলছে না পর্যাপ্ত শ্রমিক। সঙ্গে জুড়েছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। দাম বেড়েছে কাঁচামালেরও। এ সবের পরেও সিউড়ি ২ ব্লকের সাজিনা গ্রামে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে তৈরি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার প্রতিমা। যার মধ্যে অধিকাংশ ইতিমধ্যেই বাজারে বিক্রির জন্য চলে গিয়েছে বলে মৃৎশিল্পীদের দাবি।

সাজিনা হাই স্কুলের পাশে গেলেই সার দিয়ে মাটির প্রতিমা তৈরির কারখানা চোখে পড়বে। এই কারখানাগুলিতে গ্রামেরই সাতটি মৃৎশিল্পীর পরিবার নানা মূর্তি তৈরি করে। তবে সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় সরস্বতীই। তবে অন্য বারের তুলনায় এ বার সরস্বতী প্রতিমার তৈরির সংখ্যা কিছুটা কম। তা সত্ত্বেও পুজোর কয়েক দিন আগে কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন শিল্পীরা।

এ বছর যে সময়ে সরস্বতী প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল, সে সময়ে মেঘলা আবহাওয়া ও ক্রমাগত বৃষ্টির জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ অনেকটা পিছিয়ে যায়। ফলে, অন্য বছর যেখানে পুজোর দিন সাতেক আগেই মূর্তি তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়ে যায়, সেখানে এ বছর বেশ কিছুটা কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে। কাজ করতে করতেই মৃৎশিল্পী তথা সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রণজিৎ পাল বলেন, “এ বছর মূর্তি তৈরি কম হলেও চাহিদা একই রকম রয়েছে। মনে হচ্ছে, পুজোর কয়েক দিন আগেই সমস্ত প্রতিমা বিক্রি হয়ে যাবে। আবহাওয়া যদি ভাল থাকত, তা হলে আরও বেশি মূর্তি তৈরি করতাম।”

তবে প্রতিমা নির্মাণে লাভের অঙ্কটা আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে বলে দাবি রণজিতের। তিনি বলেন, “প্রতিমার রং, পোশাক, চুল, গয়না-সহ প্রতিমা তৈরির আনুষঙ্গিক সমস্ত জিনিসেরই দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে মূর্তির দাম বাড়ান সম্ভব হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই ছোট ছোট ক্লাব বা পাড়ার ছোটরা মিলে সরস্বতী পুজো করে। প্রতিমার অতিরিক্ত দাম হলে তারা কিনতে পারবে না।”

লাভের অঙ্ক যেমনই থাক, সাজিনার প্রতিমার চাহিদা কিন্তু একই রকম আছে। এমনই দাবি মৃৎশিল্পীদের। তাঁরা জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে তো বটেই, জেলার বাইরে এমনকি রাজ্যের বাইরেও পৌঁছে যায় সাজিনা গ্রামে তৈরি সরস্বতী প্রতিমা। এ বছরেই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে গিয়েছে সাজিনার তৈরি সরস্বতী প্রতিমা। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে খুচরো প্রতিমা বিক্রেতারা সাজিনায় এসে পাইকারি দরে প্রতিমা কিনে সেগুলি নিজের এলাকায় বিক্রি করেন। এমনই এক ক্রেতা পুলক উড়িন্দা বলেন, “আমরা বীরভূম-ঝাড়খণ্ড সীমানার নারায়ণপুর গ্রাম থেকে এসেছি। খুচরো প্রতিমা বিক্রি করেই আমাদের সংসার চলে। আমাদের এলাকাতেও কেউ কেউ মাটির প্রতিমা বানান, কিন্তু সাজিনা গ্রামে কম দামে ভাল মানের প্রতিমা পাওয়া যায়। তাই কষ্ট সহ্য করেও এতটা পথ পেড়িয়ে সাজিনা থেকেই প্রতিমা কিনে নিয়ে যাই।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy