চোর অপবাদ দিয়েছিল পড়শি। সেই রাগ মেটাতেই ভারী জিনিসের আঘাতে পড়শির মাথা থেঁতলে দেয় গড়বেতা থানার ললিতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হায়দর আলি। ২৩ বছর আগের সেই ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজা হল হায়দরের। সোমবার বাঁকুড়া জেলা বিচারক (৩) সুকুমার সূত্রধর এই সাজা ঘোষণা করেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী অমিয় চক্রবর্তী জানান, ১৯৯৩ সালের ১ ডিসেম্বর হায়দর তার পড়শি সেখ কলিমুদ্দিনকে (২৫) খুন করে। তবে ওই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে কলিমুদ্দিনের জমির পাম্পসেট চুরির ঘটনাকে ঘিরে। হায়দরই ওই পাম্পসেট চুরি করেছিল বলে সন্দেহ করেছিলেন কলিমুদ্দিন। এ নিয়ে দু’পক্ষের বচসাও হয়। মাঝে বিষয়টি মিটে গেলেও কলিমুদ্দিনের দেওয়া চোর অপবাদ হায়দর ভুলতে পারেনি।
ঘটনার দিন বিষ্ণুপুর থানার আস্থাশোল এলাকায় কলিমুদ্দিনকে নিয়ে বেলের খোলা বিক্রি করতে যায় হায়দর। সেখানেই একটি ক্যানালের পাড়ে ভারী কিছু জিনিস দিয়ে হায়দর কলিমুদ্দিনের মাথায় আঘাত করে খুন করে। পরের দিন বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ কলিমুদ্দিনের দেহ উদ্ধার করে। কলিমুদ্দিনের শ্বশুর আলি হোসেন মল্লিক হায়দরের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ অভিযুক্ত হায়দরকে গ্রেফতার করলে কয়েক মাসের মধ্যেই জামিন পেয়ে যায় সে। ঘটনার এক বছরের মাথায় ১৯৯৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। কিন্তু মামলা চলাকালীন ১৯৯৯ সাল থেকে ফেরার হয়ে যায় হায়দর। বহু বছর পুলিশ তার খোঁজ পায়নি। গত বছর ৩০ নভেম্বর হায়দরকে গড়বেতায় তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর বিচারাধীন বন্দি হিসেবেই মামলাটি চলছিল। অমিয়বাবু বলেন, “বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন।”