পণের জন্য বধূকে পুড়িয়ে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেওরের। সাজাপ্রাপ্তেরা হল স্বামী জীবলাল হাজরা, শ্বশুর হেমলাল হাজরা, দেওর মণীশ হাজরা ও শ্বাশুরি গৌরীদেবী। সকলেই পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানার পারবেলিয়া আমডাঙার বাসিন্দা। হেমলালবাবু পেশায় ইসিএলের কর্মী। শুক্রবার রঘুনাথপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থরাসথি চক্রবর্তী এই রায় দেন।
সরকারি কৌঁসুলি অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, খুনের ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালের ৬ জুন। ওই সন্ধ্যায় আমডাঙায় শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ উদ্ধার করে বধূ রিঙ্কিদেবীর দগ্ধ দেহ। ঘটনার পাঁচ বছর আগে ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলার জামুয়া থানার লাটাকি গ্রামের পরশ হাজরার মেয়ে রিঙ্কির সঙ্গে বিয়ে হয় নিতুড়িয়ার আমডাঙার জীবলাল হাজরার। মেয়ের মৃত্যুর পর দিন পরশবাবু নিতুড়িয়া থানায় জামাই-সহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে মেয়ের উপরে অত্যাচার চালানো হতো। ৬ জুন সন্ধ্যায় ওই কারণেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়েকে পুড়িয়ে খুন করছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগের ভিত্তিতে পর দিনই নিতুড়িয়া থানার পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তিন মাসের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। বিচার শুরু হয় ১৭ ডিসেম্বর থেকে। সরকারি কৌঁসুলি জানান, মোট ১৬ জনের স্বাক্ষ্য নেওয়া হয়। ‘‘স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরে বিচারক অভিযুক্ত চার জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনান’’— বলছেন সরকারি কৌঁসুলি।