Advertisement
E-Paper

খুনে যাবজ্জীবন দম্পতির

ধার দেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৬

ধার দেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক (দ্রুত নিষ্পত্তি আদালত) ডিএন রায় বর্মন এই সাজা দেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অমিয় চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্ত দম্পতি মুজিবর খাঁ ও তাঁর স্ত্রী কাসারি বেগম বাঁকুড়া সদর থানার বাদুলাড়া এলাকার বাসিন্দা। বাঁকুড়া সদর থানার উপরশোল এলাকার যুবক মলয় ঘোষের (৩২) কাছ থেকে কোনও কারণে নগদ ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন মুজিবর। গত বছরের ৮ জানুয়ারি বিকেলে মলয় সেই টাকা ফেরত নিতেই মুজিবরের বাড়ি গিয়েছিলেন। মুজিবরের বাড়িতে ঢোকার মুখেই নিজের ভাই নির্মল ঘোষের সঙ্গে দেখাও হয় মলয়ের। তবে সেই রাতে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি।

দাদা বাড়ি না ফেরায় নির্মল মুজিবরের বাড়িতে খোঁজ করতে গিয়েছিলেন। তবে সেই সময় মুজিবরের বাড়িতে তালা দেওয়া ছিল। ঘরে কেউ ছিলেন না। পরের দিন ৯ জানুয়ারি সকালে ফের নির্মল ও তাঁর আত্মীয়েরা মুজিবরের বাড়িতে মলয়ের খোঁজে যান। মুজিবর ও তার স্ত্রীকে বাড়িতে পাওয়া গেলেও মলয় যে তাদের কাছে এসেছিলেন, তা অস্বীকার করে ওই দম্পতি।

সে দিনই বিকেলে মুজিবরের বাড়ি সংলগ্ন একটি মাঠে মলয়ের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। নির্মল গিয়ে মলয়ের দেহ চিহ্নিত করেন। তবে ততক্ষণে সস্ত্রীক চম্পট দিয়েছল মুজিবর। পুলিশ মুজিবরের বাড়িতে গিয়ে দেখে তালা ঝুলছে। এরপর ১১ জানুয়ারি বাঁকুড়া সদর থানায় মুজিবর ও তাঁর স্ত্রী কাসারি বেগমের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন নির্মল।

ঘটনার এক মাস পরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ মুজিবর ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। ওই বছরই ১২ মে ঘটনার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৮ জানুয়ারি রাতে ওই বাড়িতেই খাবার খান মলয়। তবে পুরোটাই পরিকল্পনামাফিক চলছিল। মলয় খাবার খাওয়ার সময় আচমকা মুজিবর তাঁর গলা টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। মৃত্যু সুনিশ্চিত করতে তাঁর মাথায় ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করে ওই দম্পতি। মৃত্যুর পরে বাড়িতেই দেহটি রেখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে তারা পালিয়ে গিয়েছিল। পরের দিন বাড়িতে তারা ফেরার পরেই নির্মল দাদার খোঁজে এসেছিল। দেহ সরাতে না পেরে দুপুরের দিকে বাড়ির কাছেই ওই দম্পতি মলয়ের দেহ গিয়ে ফেলে দেয়।

চার্জশিট জমা পড়ার পরে কাসারি বেগম শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেলেও মুজিবর বিচারাধীন বন্দি হিসেবেই ছিল। এ দিন আদালতে মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়। অমিয়বাবু বলেন, “চক্রান্ত করে খুন ও দেহ লোপাটের অভিযোগে বিচারক দু’জন অভিযুক্তকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ধার্য করেন। অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাবাসের রায় দিয়েছেন তিনি।”

Couple Lifetime imprisonment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy