মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাবধান করেছেন। পরে তৃণমূলও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী বা বিপণন সংস্থার নাম করে কেউ বাড়িতে তথ্য সংগ্রহে এলে দল ও পুলিশকে জানাতে হবে। এই আবহে বাঁকুড়া শহরে সন্দেহভাজন দুই মহিলা-সহ পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশের হাতে দিলেন স্থানীয়েরা। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরেও সমীক্ষার কাজে যাওয়া কয়েক জনকে আটক করেন এলাকাবাসী।
বাঁকুড়ার পাঁচ জন বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিচয়পত্র দেখে নানা তথ্য সংগ্রহ করছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে প্রবীর ঘোষ ও হারাধন লোহার সোনামুখীর ধানশিমলা, সুদীপ মণ্ডল পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়, শিখা মাঝি ও আরতি মোদক বাঁকুড়া শহরের বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দা। তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা-সহ বেশ কিছু জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সোমবার বাঁকুড়া আদালত ধৃতদের দু’দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কোন উদ্দেশ্যে ওঁরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য জানতে চাইছিলেন, জানার চেষ্টা চলছে।” ধৃতদের আইনজীবী সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “আমার মক্কেলদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।” ধৃত আরতির স্বামী পেশায় লটারি বিক্রেতা যদুনাথ মোদক বলেন, “আরতি ডেঙ্গির সমীক্ষার কাজ করে বলেই জানি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়া শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিখরিয়া পাড়ার বস্তি এলাকায় রবিবার ওই পাঁচ জন বাসিন্দাদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড-সহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চান। এলাকাবাসীর দাবি, তাঁরা কখনও নিজেদের সরকারি সমীক্ষক, কখনও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি বলছিলেন। কেউই পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। স্থানীয়েরা তখন পুলিশ ও তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি পিঙ্কি চক্রবর্তীকে জানান। পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। রাতে গ্রেফতার করা হয়।
তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা নেতা মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তের অভিযোগ, “বিজেপি নানা কৌশলে সাধারণ মানুষের গোপন তথ্য হাতানোর চেষ্টা করছে। এতে ওদেরও যোগ থাকতে পারে। বিজেপির বাঁকুড়া জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির যোগই নেই। তৃণমূল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”
সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরে রামনগর-১ ব্লকের তাজপুর, কায়মার মতো একাধিক গ্রামে দুটি দল সমীক্ষা করছিল। খড়্গপুর থেকে এসেছে দাবি করে গ্রামবাসীর থেকে তারা আধার কার্ড-সহ নানা তথ্য জানতে চায় বলে অভিযোগ। এলাকাবাসী তাদের আটকান। কোনও অভিযোগ হয়নি। ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ জানা পরে বিষয়টি দলের ‘ওয়টসঅ্যাপ গ্রুপ’-এ জানিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন। পরে বিশ্বজিৎ বলেন, “ওরা হলুদ গুঁড়ো বিক্রির নাম করে এসেছিল। লোকজন বাধা দিতে ফিরে যায়। তবে সবাইকে সতর্ক করেছি।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)